সান নিউজ ডেস্ক: ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরপরই দিল্লির লালকেল্লায় ঢুকে নিজেদের সংগঠনের পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছে আন্দোলনরত কৃষকেরা। আর এ নিয়ে দেশটিতে চলছে নানা বিতর্ক।
অনেকেই আন্দোলনকারীদেরকে 'জঙ্গি' হিসেবে আখ্যায়িত করে এই আন্দোলনকে সমর্থন করা যায় না বলে মত দিয়েছেন। যদিও আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের কর্মীরা ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আন্দোলনকে কলুষিত করার চেষ্টা করছেন।
প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের ট্র্যাক্টর প্যারেডের অনুমতি দিয়ে রুট নির্ধারণ করে দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কিন্তু আন্দোলনকারীরা সে সব মানলেন না। কার্যত গোটা দিল্লির দখল নিয়ে ফেললেন তারা। রণক্ষেত্রেও পরিণত হয়েছিল আইটিও চত্বর, নাংলোই এলাকা। তার মধ্যেই নজিরবিহীন ছবি দেখা গেল লালকেল্লায়। পুলিশের বাধা পেরিয়ে দুপুরের দিকে একদল কৃষক ঢুকে পড়েন লালকেল্লা চত্বরে। পুরো চত্বর চলে যায় আন্দোলনকারীদের দখলে। চলতে থাকে স্লোগান। তারা পৌঁছে যান লালকেল্লায় জাতীয় পতাকার কাছাকাছি। গম্বুজের মাথায় জাতীয় পতাকা উড়ছিল। নীচে পোঁতা ছিল আরও একটি পাইপ। সেই পাইপ বেয়ে উঠে সংগঠনের পতাকা টাঙিয়ে দেন এক জন। লালকেল্লার গম্বুজের উপরেও উঠে পড়েন অনেকে।
স্বাভাবিক ভাবেই এ নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। পুলিশের নির্দিষ্ট রুট না মানা, বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খল আন্দোলন, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি লালকেল্লায় এভাবে পতাকা উত্তোলনের সমালোচনা করেন অনেকেই। দিল্লির পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের বক্তব্য, ট্র্যাক্টর প্যারেডের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট রুট মানেনি কৃষকরা। সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের আহ্বান জানানো হচ্ছে, কিন্তু তারা কিছুতেই কর্ণপাত করেনি। এটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন নয় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।
পুলিশের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলেও এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া। খোদ কৃষকদের একাধিক সংগঠনই এই আন্দোলন থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করতে শুরু করেছেন। সংযুক্ত কিসান মোর্চার বক্তব্য, 'আন্দোলনে অভূতপূর্ব সাড়া দেওয়ার জন্য কৃষকদের ধন্যবাদ জানাই। তবে অনভিপ্রেত ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশও করছি। এই ধরনের আন্দোলনের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ নেই।' কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর টুইটে জানান, 'অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রথম দিন থেকে কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে আসছি। কিন্তু এই শৃঙ্খলাহীন আন্দোলনকে মেনে নিতে পারছি না। প্রজাতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় পবিত্র তেরঙা (জাতীয় পতাকা) ছাড়া অন্য কোনও পতাকা ওড়া উচিত নয়।'
অন্য দিকে কৃষক আন্দোলনের নেতা তথা ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ টিকাইত প্রথম দিকে বলেন, কোনও সংঘর্ষের খবর নেই তার কাছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। পরে তিনিই আবার বলেন, 'আমরা জানি কারা অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলের কিছু কর্মী আমাদের আন্দোলনকে কলুষিত করার চেষ্টা করছেন।'
সান নিউজ/এসএস