আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরিয়ায় আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার ভোরে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় হামা এলাকায় চালানো এ হামলায় দুই শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত চারজন। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নাম অপ্রকাশিত এক সেনা কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে লেবানন সীমান্তের দিক থেকে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর সিরিয়ায় এটাই ইসরায়েলের প্রথম হামলা।
সানার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবানিজ শহর ত্রিপলির দিক থেকে একঝাঁক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি বাহিনী। হামা প্রশাসনের কয়েকটি স্থাপনা তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল।
সিরীয় বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়। তবে ইসরায়েলি আগ্রাসনে শেষপর্যন্ত বাবা, মা, দুই শিশুসহ একই পরিবারের চার সদস্য নিহত হন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
কয়েক বছর ধরেই সিরিয়ায় কথিত ইরান-সমর্থিত সামরিক স্থাপনায় এধরনের হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। তবে এসব হামলার কথা তাদের খুব একটা স্বীকার করতে দেখা যায় না।
ইরান এবং এর লেবানিজ মিত্র হিজবুল্লাহ সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে গৃহযুদ্ধে সহযোগিতা করছে বলে দাবি ইসরায়েলের। একারণে ইরান-হিজবুল্লাহকে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখিয়ে সিরিয়ায় আগ্রাসন বৈধ করার চেষ্টা করছে ইসরায়েলিরা।
গত ১৩ জানুয়ারি সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইরান সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু স্থাপনায় প্রবল হামলা চালায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। এতে অন্তত ৫৭ যোদ্ধা নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হন। দেশটিতে গত কয়েক বছরের মধ্যে এটাই ছিল ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর সিরিয়ায় অন্তত ৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তারা। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে এপর্যন্ত দেশটিতে কয়েকশ’বার বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
গত চার বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ইসরায়েলি হামলা-আগ্রাসন অনেকটাই বাড়তে দেখা গেছে। এসময় দখল করা পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন চারগুণ বাড়িয়েছে ইসরায়েলিরা। দ্বিরাষ্ট্র সমাধান ছাড়াই আরব দেশগুলোকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনেও ঠেলে দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তবে নতুন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতাগ্রহণের পরপরই তার প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, তারা ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি পুনর্বহাল এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন পৃথক রাষ্ট্র গঠনে উদ্যোগী হচ্ছে। সূত্র : আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি।
সান নিউজ/এসএম