আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মাইলের পর মাইল পুড়ছে বনাঞ্চল । পুড়ছে মানুষের সম্পদ, আর মনের ভেতর পুষে রাখা আগামীর স্বপ্ন। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। এমনই এক নিদানের কালে এখন অস্ট্রেলিয়া।
আগুন এতটাই দানবীয় রূপ ধারন করেছে যে, সুদূর সুইজারল্যান্ড থেকেও দেখা যাচ্ছে বন পোড়া ধোঁয়া। যার থাবায় এখন পর্যন্ত ৫০ কোটিরও বেশি প্রাণী মারা গেছে। ১ জন উদ্ধারকর্মীসহ নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৩ জন মানুষ।
এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন কতৃপক্ষ। ইতিহাসের এমন বিভৎসতা এর আগে আর দেখেনি অস্ট্রেলিয়রা। সবচাইতে ক্ষতির মধ্যে পড়েছে বণ্য প্রানী।
অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয় সংকটে রূপ নিয়েছে দাবানল। গতবছরের সেপ্টেম্বর থেকেই জ্বলছে দেশটির শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। এ নিয়ে দেশটির মানুষের পাশাপাশি চিন্তিত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের পরিবেশবিদরাও।
দমকা হাওয়ায় আগুন আরো ছড়িয়ে পড়ায় দক্ষিণপশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কোনো কোনো এলাকার আকাশ লালচে ও অন্ধকার হয়ে গেছে। শনিবার ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়।
গতবছর সেপ্টেম্বর থেকে অস্ট্রেলিয়ার একাধিক জায়গায় দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় আগুন নেভাতে সমস্যায় পড়ে দমকল। দাবানলের অপ্রতিরোধ্য গতি থামাতে দেশটি এরইমধ্যে ৩ হাজার সেনা মোতায়েন করে।
সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার দাবানলে প্রাণ হারানো অসংখ্য প্রাণির ঝলসানো ছবি। পরিবেশবিদরা মানুষের পাশাপাশি প্রাণীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে।
ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলবর্তী অঞ্চলে দাবানলের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে ক্যাঙ্গারুরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য প্রাণী পুড়ে মরে পরে আছে। কাকাতুয়াসহ অনেক প্রজাতির পাখি মরে গাছের নিচে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কোয়ালার মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
ব্যুরো অব মেটিওরোলজি জানায়, ঝড়ো দখিনা হাওয়া উপকূলের দিকে ধেয়ে আসায় দ্রুত পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। উচ্চ তাপমাত্রা, আগুন ও বাতাসের তীব্রতার কারণে নিউ ইয়ার্স ইভে কয়েক হাজার মানুষ উপকূলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
এবারের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নিবে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
সান নিউজ/সালি