আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছরের ১ জানুয়ারির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আসা লক্ষাধিক বাংলাদেশি অভিবাসীসহ সোয়া কোটি বিদেশি নাগরিককে ৫ বছরের জন্য অস্থায়ী নাগরিকের মর্যাদা দেয়া হবে।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে শপথ গ্রহণের পরই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিবাসন ইস্যুতে প্রদত্ত অঙ্গীকারের এই প্রস্তাবনা কংগ্রেসে পাঠানো হবে। এই সময়ের মধ্যে তারা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করে প্রমাণ দেখাতে হবে যে, নিয়মিত ট্র্যাক্স প্রদান করেছেন, কোন অপরাধে লিপ্ত হননি। এর ঠিক ৩ বছর পরই সিটিজেনশিপের আবেদন করতে পারবেন। তাহলেই তাদেরকে স্থায়ী গ্রিনকার্ড প্রদান করা হবে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বাইডেনের সঙ্গে কাজ করছেন এমন কর্মকর্তারা বহুল প্রত্যাশিত অভিবাসন আইন সংস্কারের অভিপ্রায়ে এসব প্রস্তাবনা কংগ্রেসে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন। সীমান্ত প্রাচির নির্মাণের পরিবর্তে নিরাপত্তা ও নজরদারি সুষ্ঠুভাবে করার জন্যে তথ্য-প্রযুক্তির সমন্বয়ের কথাও থাকবে ঐ প্রস্তাবে।
অপরদিকে, মা-বাবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে আসা শিশু-কিশোর, যারা ডেফার্ড এ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড এ্যারাইভাল তথা ড্যাকা কর্মসূচিতে প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলে ওয়ার্ক পারমিট পেয়েছেন, সেই ড্রিমাররা সরাসরি গ্রিনকার্ডের আবেদন করতে পারবেন। একইভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত দেশসমূহের নাগরিকের মধ্যে যারা ইতিপূর্বে টেম্পরারী প্রটেকশন স্ট্যাটাস তথা টিপিএস পেয়েছেন গ্রিনকার্ডের আবেদন করবেন।
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবার দিনেই যে কটি ইস্যুতে বাইডেন-কমলা হ্যারিস এ্যাকশন নেবেন বলে দুদিন আগে জানিয়েছেন, অভিবাসন ইস্যুটি তার অন্যতম। নির্বাচনী অঙ্গিকারেও তা ছিল। এজন্যে লেটিনো-এশিয়ানরা জোর সমর্থন দেন বাইডেন-কমলাকে।
প্রসঙ্গত; ২০১৩ সালেও ওবামার আগ্রহে কংগ্রেসে এ ধরনের একটি বিল উঠেছিল। সিনেটে তা পাশ হলেও রিপাবলিকান শাসিত প্রতিনিধি পরিষদে পাশ হতে পারেনি। এবার কংগ্রেসের উভয় কক্ষেই ডেমক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং রিপাবলিকানদের মধ্যেও অভিবাসন ইস্যুতে বোধোদয় ঘটায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটের অভাব হবে না বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে।
আরও উল্লেখ্য, এই বিল পাশ হলে তা হবে গত ৩৫ বছরের মধ্যে অভিবাসন ইস্যুতে সবচেয়ে বড় একটি বিষয়। সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ৩০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বৈধতার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন। এরপর ডেমক্র্যাট আর রিপাবলিকানরা প্রতিযোগিতা মূলকভাবে অভিবাসন ইস্যুতে প্রহসনের খেলায় মেতে ছিলো অভিযোগ রয়েছে।
বাইডেন-কমলার অভিবাসন ইস্যুতে খোলামেলা মতামতের প্রশংসা ইতিমধ্যেই ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে কমিউনিটিতে। যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত অঞ্চল এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহের লোকজনকে রিফ্যুজি কোটায় যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রদানের পরিধিও বিস্তৃত করা হবে। বিদেশী দক্ষ শ্রমিক আমদানির বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করা হবে একই সঙ্গে।
সান নিউজ/এসএ