সান নিউজ ডেস্ক:
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের মতো একের পর এক পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক স্তরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ভারত। এমনকী দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্রগুলিও এখন আর নয়াদিল্লির পাশে নেই। এমনই মনে করেন ভারতের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন। এর ফলে কূটনৈতিক স্তরে ভারতের ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হয়নি বলে অভিমত কূটনীতিকের। শুক্রবার দিল্লিতে এক আলোচনা সভায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র বিষয়ে প্রথমবারের মতো এ ধরণের মন্তব্য করলেন তিনি।
তিনি বলেন, জম্মু কাশ্মিরকে আলাদা করে তার বিশেষ মর্যাদা বাতিল করতে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মতো ঘটনায় ভারত আন্তর্জাতিক স্তরে কার্যত কোনও সমর্থন পায়নি। একমাত্র কিছু প্রবাসী অন্ধ সমর্থক এবং ইউরোপিয় ইউনিয়নের অতি দক্ষিণপন্থী কয়েকজন এমপি ছাড়া কেউ একে সমর্থন করেননি।'
ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব, রাষ্ট্রদূত এবং সবশেষ মনমোহন সিং সরকারের জাতীয় নিরাপত্তার উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করা মেনন বলেন, 'এই পদক্ষেপের জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের সমালোচকদের তালিকা বরং দীর্ঘ। এই তালিকায় যেমন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ আছেন তেমনি আছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল। জাতিসংঘের উদ্বাস্তু সংক্রান্ত হাই কমিশনারও ভারতের পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এমনকী নরওয়ের রাজার মতো স্বল্পভাষী ও নম্র ব্যক্তি এ নিয়ে মুখ না খুলে পারেননি।' নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন আন্তর্জাতিক কনভেনশনের পরিপন্থী বলেও মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে ভারত জুড়ে বিক্ষোভ চলছে অনেক দিন ধরে। লোকসভায় পাশ হওয়া ওই বিলে বলা হয়েছে- পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে সেসব দেশের হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান যারা ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতে চলে এসেছেন, সেই দেশ থেকে নির্যাতনের বলি হয়ে, তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। চলতি আইন অনুযায়ী ১২ বছর ভারতে বসবাস করার পরে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে নিয়ম ছিল, সেটাও কমিয়ে সাত বছর করা হয়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস