আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভর্তি দিন থেকেই রোগীর নাকে-মুখে নল ঢোকানো ছিল। ভেন্টিলেশনে নড়াচড়া করার ক্ষমতা ছিলনা। কার্যত তিনি রয়েছেন কোমায়। ২০ বোতল মিনারেল ওয়াটার পান করার কথা লেখা রয়েছে হাসপাতালের বিলে।
ভুতুড়ে সে বিল নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের দ্বারস্থ হন সুমিতা পাণ্ডা। গোটা বিল পুঙ্খানুপুঙ্খ জরিপ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মোটা টাকা ফেরত দিতে বলেছে স্বাস্থ্য কমিশন। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি হাসপাতালে।
জানা গেছে, ঘটনাটি ২০২০ সালের জুলাই মাসের হলেও বর্তমানে তা প্রকাশ্যে আসে। করোনা তখন মূর্তিমান আতঙ্ক। সুমিতা পাণ্ডার বাবা অমরেন্দ্র পালের ভয়ঙ্কর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। মহেশ তলার বাসিন্দাকে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গের ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। করোনা পরিক্ষা করলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
প্রথম দিন থেকেই অক্সিজেন স্যাচুরেশন তলানিতে। অমেরন্দ্রর মেয়ের প্রশ্ন, হাসপাতালে প্রবেশের পর থেকেই বাবাকে ভেন্টিলেশনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে মিনারেল ওয়াটার পান করলেন কীভাবে? টানা ১১ দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর গত ২২ জুলাই মারা যান অমরেন্দ্র। চিকিৎসার বিল দিতে গিয়েই পরিবারের মাথায় হাত।
১১ দিনের বিল হয়েছে ৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। বিল নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের দ্বারস্থ হন সুমিতা। সেই বিল খতিয়ে দেখতে গিয়েই বিস্মিত রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের সদস্যরা। বিলে ২০ বোতল পরিশুদ্ধ পানির দামও ধরা হয়েছে।
কমিশন চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যয় জানিয়েছেন, ভেন্টিলেশনের রোগী মিনারেল ওয়াটার পান করলেন কী করে? তার কোনও জবাব দিতে পারেনি সেই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও বিলের একাধিক জায়গায় অসঙ্গতি পেয়েছে কমিশন।
অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিল আমরা খতিয়ে দেখেছি। অনেক ক্ষেত্রেই দ্বিগুণ টাকা নেওয়া হয়েছে। অমরেন্দ্রবাবুর সামান্য লিভার ফাংশন টেস্টের জন্য ২ হাজার ৬২০ টাকা নিয়েছে হাসপাতাল। অথচ বাইরে সেই একই টেস্ট করাতে মাত্র ৭০০ টাকা নেওয়া হয়।
রেমডিসেভির মেডিসিনের দাম বাজারে ৪ হাজার টাকা হলেও রোগীর থেকে ৫ হাজার ৪০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে বেসরকারি সেই হাসপাতালকে মূল বিল থেকে ৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা ফেরত দিতে বলেছে স্বাস্থ্য কমিশন। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।
সান নিউজ/এসএ