আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায় দেশের মধ্যেই মানুষের ক্ষোভের কারণে হয়ে উঠেছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই তাণ্ডব ছিল নজিরবিহীন। এই ঘটনায় সারাবিশ্বের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। পার্লামেন্ট ভবনে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার কারণে ট্রাম্পের পদত্যাগ চাইছে বিভিন্ন মহল। এমনকি প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ট্রাম্পের অপসারণ চায় দেশটির ৫৭ ভাগ নাগরিক।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও জরিপ প্রতিষ্ঠান ইপসস পরিচালিত এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, গত নভেম্বরে ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া প্রতি দশজনের মধ্যে সাতজনই পার্লামেন্ট ভবনে উগ্র ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবের ঘোর বিরোধী।
তবে এদের মধ্যে বেশ কিছু মানুষ এখনই ট্রাম্পকে অপসারণের পক্ষে না থাকলেও বেশিরভাগই তার তাৎক্ষণিক পদত্যাগ চায়। মাত্র দু’সপ্তাহ পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসবেন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু বুধবার ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনার পর তার আগেই ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
বুধবার ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় উগ্র ট্রাম্প সমর্থকরা। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালাতে হয় পুলিশকে। এই ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। ট্রাম্পের উসকানিতেই এই হামলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ক্যাপিটলে তাণ্ডবের ঘটনায় ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান উভয় দলই নিন্দা জানিয়েছে।
আগামী ২০ জানুয়ারি জো বাইডেনের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন ট্রাম্প। তার আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তিনি। ক্ষমতা হস্তান্তরে তার হাতে দুই সপ্তাহেরও কম সময় বাকি আছে। কিন্তু ক্যাপটল ভবনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনই তার ওপর পদত্যাগের চাপ বাড়ছে।
এদিকে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং ডেমোক্র্যাট দলের অন্যান্য সদস্যদের বিশ্বাস ট্রাম্পকে এখনই ক্ষমতাচ্যুত করা উচিত। এক বিবৃতিতে পেলোসি জানিয়েছেন, ‘এটা ডেমোক্র্যাট সদস্যদের আশা যে, প্রেসিডেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে পদত্যাগ করবেন। কিন্তু তিনি যদি তা না করেন তবে আমি নীতি-নির্ধারক কমিটিকে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী অনুযায়ী ট্রাম্পকে অভিশংসনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেব।’
অর্থাৎ ট্রাম্পের হাতে এখন দু’টি পথ খোলা। এক স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা অথবা অভিশংসিত হয়ে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া। কোনটা গ্রহণ করবেন সেটা তার সিদ্ধান্ত। ন্যান্সি পেলোসি বলছেন, ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সব বিকল্পই হোয়াইট হাউসের হাতে আছে।
সান নিউজ/এসএম