ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হওয়ার ঘটনায় ‘ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ’ নেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছে ইরান। এরপর পবিত্র মসজিদের চূড়ায় যুদ্ধের লাল ঝাণ্ডা উড়িয়েছে ইরান। পতাকাটিকে সোলেমানি হত্যার দায়ে আমেরিকার ওপর ইরানের বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার হিসেবে দেখা হচ্ছে। শিয়া সংস্কৃতিতে লাল পতাকা দিয়ে অন্যায় রক্তপাতের বদলা নেওয়ার প্রতীক। সম্ভাব্য যুদ্ধের হুঁশিয়ারি হিসেবেও দেখা হচ্ছে এ পতাকাকে।
গতকাল শনিবার ইরানের কম প্রদেশের পবিত্র মসজিদ জামকারান’র সর্ব্বোচ্চ গম্বুজে রক্তলাল পতাকা ওড়ায় ইরান। অবশ্য এ ঘটনার আগেই ইরাকের বাগদাদে মার্কিন দূতাবাস ও সালাহউদ্দিন প্রদেশে মার্কিন সেনাদের বালাদ বিমান ঘাঁটিতে রকেট হামলার ঘটনা ঘটে।
বাগদাদের মার্কিন স্থাপনায় কারা হামলা চালিয়েছে তা এখনও কেউ নিশ্চিত করেনি। তবে ওই হামলায় একযোগে ৫টি রকেট ছোড়া হয়। এতে এখন পর্যন্ত ৫ জন আহত বলে জানা গেছে।
ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো ইরান জামকারান মসজিদে রক্তলাল পতাকা ওড়ানো হয়েছে, যেখানে লেখা রয়েছে ‘যারা হোসেনের রক্তের বদলা নিতে চায়’।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা সম্পদের ওপর হামলা চালালে ইরানের অর্ধশত স্থাপনায় হামলা চালানো হবে বলে পাল্টা হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ইরান হামলা করলে তাদের ৫২টি স্থাপনায় ‘খুব দ্রুত খুব শক্তিশালী’ হামলা চালানো হবে। ইরানি জেনারেল কাশেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার ইরানের হুমকীর পরিপ্রেক্ষিতে এই হুশিয়ারী দেন ট্রাম্প।
টুইটে করা মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ কথা জানিয়েছে বিবিসি। টুইটে ট্রাম্প বলেন, জেনারেলের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় ইরান খুব সাহসের সঙ্গে বলে যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু স্থাপনা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের ৫২টি স্থাপনা লক্ষ্যবস্তুতে রেখেছে বলে সেখানে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। এর মধ্যে কিছু স্থাপনা রয়েছে ইরান এবং ইরানের সংস্কৃতির জন্য খুবই উচ্চপর্যায়ের ও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আর কোনো হুমকি চায় না!’ বাগদাদে সোলাইমানির জানাজার বিশাল শোকযাত্রা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর করা ওই টুইটে ট্রাম্প বলেন, ১৯৭৯ সালে তেহরানে যে ৫২ জন মার্কিন নাগরিককে মার্কিন দূতাবাস দখল করে জিম্মি করা হয়েছিল ৫২টি স্থাপনা তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করবে বলে উল্লেখ করেন ডেনাল্ড ট্রাম্প।
ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার মেজর জেনারেল কাশেম সোলাইমানির গাড়িবহর লক্ষ্য করে গত শুক্রবার ভোরে ড্রোন হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ওই হামলায় সোলাইমানির সঙ্গে কাতাইব হিজবুল্লাহ মিলিশিয়ার নেতা আবু মাহদি আল-মুহানদিসসহ ১০ জন নিহত হন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ওই হামলা চালানো হয় বলে জানায় পেন্টাগন। এর আগে গত রোববার ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় মিলিশিয়া গোষ্ঠী কাতাইব হিজবুল্লাহর অন্তত ২৫ সদস্য নিহত হন।