আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্যাপিটল হিল ভবনে দাঙ্গা-হামলার ঘটনার পর থেকে কড়া নজরে রাখা হয়েছে ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ওয়াশিংটন ডিসি পুরো নগরীতে চলছে কারফিউ। রাস্তা-ঘাট ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা। আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে করা নজরে রাখা হবে ট্রাম্পকে। এসব তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) রাত থেকে ডিসি নগরী নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে আছে। এর মূল কারণ ক্যাপিটল হিলে সেই দিনকার হামলা। চোখ রাখা হয়েছে ট্রাম্পের ওপরও। তিনি আইন শৃঙ্খলা সংস্থা দ্বারা কড়া নজরদারিতে আছেন।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি থাকা ডিসির রাজপথ এখন শান্ত। ১৫ দিনের জরুরি অবস্থার কারণে প্রায় সব কিছুই শূণ্য হয়ে গেছে। ছয়টি রাজ্য থেকে ন্যাশনাল গার্ড এনে সাত ফুট পরপর তাদের দ্বারা ক্যাপিটল হিলকে ঘিরে রাখা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘটে যাওয়া পরিস্থিতি হালকা করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তার হতে সময় নেই বলে মনে করছেন আইন বিশ্লেষকেরা।
এদিকে, চলতি মাসের ২০ তারিখে মেয়াদে শেষ হওয়ার আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করার দাবি উঠেছে। গত বুধবার ক্যাপিটল হিল ভবনে ৪৫ তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট’র সমর্থকদের হামলার পরই তাকে হোয়াইট হাউস থেকে বিতাড়নের দাবি ওঠে। সিনেটরদের মধ্যে কেউ কেউ ট্রাম্পকে অভিশংসন করার দাবিও জানিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পকে অপসারণের জন্য দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে সংখ্যালঘিষ্ঠদের নেতা ডেমোক্র্যাট সিনেটর চাক শুমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ক্যাপিটল ভবনে বুধবার যা ঘটেছে, তা প্রেসিডেন্টের উসকানিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। এই প্রেসিডেন্টের আর এক দিনও ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়।
নিউইয়র্কের এই সিনেটর ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের প্রতি মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই সংশোধনী অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালনে অযোগ্য হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা একমত হয়ে তাকে অব্যাহতি দিতে পারেন। চাক শুমার বলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভা যদি পদক্ষেপ নিতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে কংগ্রেসের উচিত প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করার উদ্যোগ নেওয়া।
ইলিনয় থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্য অ্যাডাম কিনজিঞ্জারও ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই বিভীষিকাময় অধ্যায়ের সমাপ্তি টানতে ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করার এখনই সময়। প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালনে অযোগ্য। তিনি অসুস্থ। এ ছাড়া প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাট সদস্য ইলহান ওমর ও আলেক্সান্দ্রিয়া অকাসিও কর্তেজের নেতৃত্বে একদল আইনপ্রণেতা পৃথকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন, তারা কংগ্রেসে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রস্তাব আনতে প্রস্তুত।
সান নিউজ/এস