নিজস্ব প্রতিবেদক : ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ধারণ করতে বিশ্বব্যাপী যে রিখটার স্কেল ব্যবহার হয়ে আসছে তা ৮৪ বছরের পুরনো। আগের সেই রিখটার স্কেলের জায়গায় এবার আসছে আরও নিখুঁত এক স্কেল, যার নাম দাস ম্যাগনিচ্যুড স্কেল (এমডব্লিউজি)। রঞ্জিত দাস নামে এক বাঙালি তৈরি সেই স্কেলেই এখন পৃথিবীর কাঁপুনি মাপা হচ্ছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
ভারতের আসামের ঢেকিয়াজুলি এলাকার বাসিন্দা, ভূকম্প বিশেষজ্ঞ রঞ্জিত দাস বর্তমানে গবেষণা ও কাজ করেন চিলির ন্যাশনাল ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ সেন্টারে। তিনি জানান, ভূমিকম্পের নিম্ন, মধ্য ও উচ্চ কম্পাঙ্ক পরিমাপের ক্ষেত্রে ১৯৭৯ সালেই এসে গিয়েছিল জাপানের হিরু কানামোরি ও আমেরিকার টমাস হ্যাঙ্কসের আবিষ্কৃত মোমেন্ট ম্যাগনিচ্যুড স্কেল বা এমডব্লিউ।
কিন্তু সেই রিখটার স্কেল নামই প্রচলিত থেকে যায়। রঞ্জিত দাসের আবিষ্কৃত এমডব্লিউজি ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে গতিতে যাওয়া চাপ তরঙ্গকে নিখুঁত পরিমাপ করে। রিখটারের মাত্রা মাঝারি ভূকম্পে প্রামাণ্য হলেও বড় কম্পনের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নয়। সিসমোলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকা জার্নালে দাস ও তার সহযোগী বিজ্ঞানী মুকুটলাল শর্মা, দীপঙ্কর চৌধুরী, হংসরাজ ওয়াসন ও গ্যাব্রিয়েল গঞ্জালেসের গবেষণা ও উদ্ভাবনের কথা প্রকাশিত হয়েছে।
১৯৭৬ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত হওয়া ২৫৭০৮টি ভূমিকম্প নিয়ে কাজ করেছেন তারা। এর মধ্যে ৭৬ শতাংশ কম্পন থেকে উদ্ভূত শক্তির মাপ এমডব্লিউজি পরিমাপের সঙ্গে মিলে গেছে। যেখানে এমডব্লিউয়ের সঙ্গে মিলেছে মাত্র ২৪ শতাংশ। দাস বলেন, এমজিডব্লিউ কম্পনশক্তির পর্যালোচনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করবে কারণ চাপ তরঙ্গের প্রথম থেকেই দ্রুত কম্পনমাত্রা পরিমাপ করতে পারে এই স্কেল।
কম্পনের উচ্চ ও নিম্ন তরঙ্গের নিখুঁত পরিমাপের মাধ্যমে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ক্ষতির আন্দাজ দিতে পারে। ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর সুমাত্রায় যে ভূমিকম্প হয়েছিল তার কম্পনমাত্রা এমডব্লিউ স্কেলে ছিল ৯.০। কিন্তু এমজিডব্লিউ স্কেলে তা ছিল ৯.১। বড় কম্পনের ক্ষেত্রে এই .১ ভগ্নাংশের হিসাবও কম কথা নয়; কারণ এক ইউনিট ম্যাগনিচ্যুড বাড়ার অর্থ নির্গত শক্তি ৩২ ধাপ বৃদ্ধি পাওয়া। ভূকম্পপ্রবণ এলাকার মানচিত্র তৈরির ক্ষেত্রেও নতুন স্কেল অত্যন্ত কার্যকর।
সান নিউজ/এসএ