আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ সময় দরকষাকষির অবসান ঘটিয়ে বিনিয়োগ চুক্তিতে পৌঁছতে যাচ্ছে চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। চলতি সপ্তাহেই চুক্তিটি চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এ চুক্তির আওতায় ইইউ চীনের বাজারে আরও সহজে প্রবেশাধিকার দেবে এবং প্রতিযোগিতার উন্নতি করবে। ২০১৪ সালে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে চুক্তিটি আটকে রয়েছে। খবর বিবিসি।
২৪ ডিসেম্বর ঘোষিত ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তির কয়েক দিনের মাথায় এ চুক্তির ঘোষণা আসছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ চুক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার ক্ষেত্রে চীনের অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে।
একাধিক প্রতিবেদনে, এ চুক্তি ইইউর সংস্থাগুলোর জন্য চীনের উৎপাদন খাতের পাশাপাশি নির্মাণ, বিজ্ঞাপন, উড়োজাহাজ পরিবহন ও টেলিকম খাতকে উন্মুক্ত করবে। চুক্তিতে অন্যতম বিষয় ছিল জাতীয় সুরক্ষার প্রতি সংবেদনশীলতার কারণে ইইউর জ্বালানি বাজারে চীনের প্রবেশাধিকার দেয়া হবে কিনা।
পারস্পরিক ভিত্তিতে ইউরোপীয় পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি খাতের একটি ছোট অংশে বেইজিংকে প্রবেশাধিকার দেয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। চুক্তিটি চীনে বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা, যেমন যৌথ উদ্যোগের শর্ত এবং নির্দিষ্ট কয়েকটি শিল্পে বিদেশী মালিকানার বাধাগুলো অপসারণের জন্যও কাজ করবে।
প্রত্যাশিত চুক্তিটি সম্পাদিত হওয়ার পরে এটি ইউরোপীয় সংসদের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। সুতরাং দীর্ঘ এ প্রক্রিয়া আগামী বছরের দ্বিতীয়ার্ধের আগে শেষ হবে বলে মনে হচ্ছে না। সোমবার ইউরোপীয় কমিশন চীনে শ্রমিকদের অধিকারের মূল ইস্যুসহ বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতির কথা জানিয়েছে।
চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে বিপুলসংখ্যক উইঘুর মুসলিমকে আটকে রেখে জোর করে শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করার বিষয়গুলোও সামনে এসেছে। যদিও বেইজিং বরাবরের মতো এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এ চুক্তির আওতায় চীনকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার নিয়মগুলো প্রতিপালনে বাধ্য করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে।
তবে ইইউ-চীন চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি মাসে প্রকাশিত ইইউর ট্রান্সল্যান্টিক কৌশলে চীনের সৃষ্ট কৌশলগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রকে ইইউর সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে আছে। ট্রাম্প প্রশাসন জাতীয় সুরক্ষার জন্য হুমকিস্বরূপ বেশ কয়েকটি চীনা প্রযুক্তি সংস্থাকে নিষিদ্ধ করছে। আর হংকংয়ে চীন নতুন সুরক্ষা আইন আরোপ করায় এবং নভেল করোনাভাইরাস সম্পর্কে গুজব নিয়ে এ বছর ইইউ-চীন সম্পর্ক সকুংচিত হয়ে পড়েছে।
সান নিউজ/এসএ