ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দ্রুত গতিতে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগী এবং তাদের মৃত্যুর সংখ্যা। এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্যে এক ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশটিতে করোনা ভাইরাসের হটস্পট বা মূল উর্বর ভূমি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে নিউইয়র্ক। যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে যে ১,০৪১ জন মানুষ মারা গেছে তার মধ্যে বেশির ভাগই এই রাজ্যের।
লকডাউন ঘোষণার পর রাস্তাঘাট ফাঁকা। তারপরও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য টহল দিচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন। বুধবার দিন শেষে যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে শুধু নিউ ইয়র্ক রাজ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ হাজার।
এদিকে রোগী সামাল দিতে হাসপাতালে আরও বেডের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তারা। একই অবস্থা মেডিকেল সরঞ্জামের ক্ষেত্রেও। অতিরিক্ত ডাক্তার ও নার্স চেয়েও আবেদন জানানো হচ্ছে। সেখানকার বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, সামনের দু’চার সপ্তাহে আরো ভয়াবহ মহামারি হিসেবে দেখা দিতে পারে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। তাতে হাসপাতালগুলোতে এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে, যেমনটা হয়েছে ইতালি ও স্পেনে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।
বুধবার (২৫ মার্চ) রাতে ওয়াশিংটনের সিনেট সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে ২ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলারের অর্থনৈতিক উদ্ধার বিষয়ক প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। এর উদ্দেশ্য ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সহায়তা করা। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটাই অর্থনৈতিক সহায়তা বিষয়ক সবচেয়ে বড় অংকের আর্থিক পরিত্রাণের অংক বা বাজেট। প্রতিনিধি পরিষদ এই বিলটি শুক্রবার পাস করতে পারে।
এ অবস্থায় নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যানড্রু কুমো আবারো এই ভয়াবহ প্রাণহানির ফলে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। কারণ, এই রাজ্যটি হলো আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য গেটওয়ে বা প্রবেশদ্বার। এখানে জনসংখ্যা অতি ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে সাবওয়ে, এলিভেটর, এপার্টমেন্ট ভবন এবং অফিস শেয়ার করেন কমপক্ষে ৮৬ লাখ মানুষ।
অ্যানড্রু কুমো বলেছেন, 'এই যে খুব কাছাকাছি থাকা এটা আমাদের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠেছে। তবে এটা সত্য যে, আপনার সবচেয়ে দুর্বলতা হলো আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি। এই যে আমাদের ঘনিষ্ঠতা এটাই আমাদেরকে একত্রিত করেছে। এটাই হলো নিউ ইয়র্ক।'
ওদিকে সান ফ্রান্সিসকোতে বসবাস করেন প্রায় ৭০ লাখ মানুষ। তারা ১৭ই মার্চ থেকে নিজেদেরকে ঘরে বন্দি করে ফেলেছেন। ক্যালিফোর্নিয়ায় ৪ কোটি মানুষের সবাই তাদেরকে তিনদিন পরে প্রায় লকডাউন করে ফেলেছেন।