আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত অসংখ্য বাংলাদেশি প্রবাসী মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এদের মধ্যে শতাধিক প্রবাসী সেলাঙ্গরের জেরাম এলাকার একটি পাম অয়েলের জমির ভেতর কন্টেইনারে বসবাস করছেন।
সেখানে কন্টেইনার দিয়ে নির্মিত হোস্টেলে ১৪.৬ বর্গমিটার জায়গায় থাকতে হচ্ছে ৮ জনকে। এখানে ১০০ জনের বেশি মানুষের বসবাস। তারা সবাই বাংলাদেশি শ্রমিক। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এই বাগানের ভেতর বিভিন্ন সাইজের ৪০টি কন্টেইনার আছে। ২০ ফুটের এই কন্টেইনারে ৪টি করে বাংক বেড। সেখানে ৮ জন করে বাস করছেন। প্রয়োজনীয় আসাববপত্রসহ কোনকিছু রাখার জায়গা নেই বললেই চলে।
গোসলের জন্য কন্টেইনারের পেছনে আলাদা জায়গা। সেখানেই আবার রান্নাঘর। এই কর্মীরা সবাই পাশের দুটি ফার্নিচার ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। একজন প্রবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা ১০০ জনের বেশি থাকছি। প্যাকেটে মাছ যেমন থাকে, আমাদেরও সেভাবে থাকতে হয়।
অবাক করার বিষয় হলো এভাবে বসবাস করেও অনেক প্রবাসী অভিযোগ করতে চান না। ১২ বছর ধরে বসবাস করা একজন বললেন, ‘খারাপ অবস্থায় নেই, পাশে বাজার, আলো-বাতাসও ঠিক আছে, বিদ্যুৎ,পানি সবই আছে।
মালয়েশিয়া থেকে চলতি বছর ঘুরে আসা মানবাধিকারকর্মী রায়হান কবির শ্রমিকদের এমন অবস্থা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এই জায়গাটি তারও পরিচিত। রায়হান মালয়েশিয়ায় নিজে অনেক ঝামেলা মোকাবিলা করেছেন। কাতার-ভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রবাসীদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে বক্তব্য দিয়ে গ্রেফতার হওয়ার পর মালয়েশিয়া ছাড়তে হয়েছে তাকে।
অথচ এখানে কেউ কেউ এক যুগের বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন কিন্তু কোন অভিযোগ করছেন না। কারণ তারা শ্রম আইন সম্পর্কে কিছুই জানেন না। রায়হান কবির শনিবার দুপুরে এ বিষয়ে অভিজ্ঞার কথা বলেন,‘কী কী সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে, সবকিছু চুক্তিতে স্পষ্ট বলা থাকে।
সেই দেশের দূতাবাস সেগুলো বাস্তবায়ন করছে কি না, চুক্তি লঙ্ঘন হচ্ছে কি না সেগুলো আমাদের কর্মকর্তাদের দেখা উচিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো কেউ প্রতিবাদ করেন না।’ মালয়েশিয়ার সর্বশেষ সংশোধিত শ্রম আইনে বলা আছে, একজন কর্মীর থাকার জায়গা ৩ বর্গমিটারের কম হতে পারবে না। কিন্তু এই কন্টেইনারের হোস্টেলে ১৪.৬ বর্গমিটার জায়গায় থাকতে হচ্ছে ৮ জনকে।
সান নিউজ/এসএ