আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নজিরবিহীন সাইবার হামলা চালিয়েছে অজ্ঞাত হ্যাকাররা। যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে সাইবার ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে দাবি করে থাকে সেই দাবি এবার মারাত্মকভাবে প্রশ্নের মুখোমুখি হল। আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও যে বিদেশি শক্তির কাছ থেকে অত্যন্ত মারাত্মক আঘাতের শিকার হতে পারে তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
সাইবার হামলার এইসব ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের (পেন্টাগন) পর এখন দেশটির জ্বালানী মন্ত্রণালয় ও জাতীয় পারমাণবিক নিরাপত্তা দপ্তর জানিয়েছে, হ্যাকাররা এ দুই প্রতিষ্ঠানের তথ্য চ্যানেল হাতে পেয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত কয়েক দিনে ব্যাপক সাইবার হামলা হওয়ার বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ও দেশটির নিরাপত্তা বিভাগের সাইবার শাখা।
মার্কিন কর্মকর্তারা এখনও এসব হামলার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখছেন।
মনে করা হচ্ছে এইসব সাইবার হামলা ছিল খুবই সুসংগঠিত ও বড় ধরনের লক্ষ্য-ভিত্তিক। মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট এসব সাইবার হামলার জন্য রাশিয়ার 'কোজি বিয়ার' নামের একটি হ্যাকার গোষ্ঠী দায়ী বলে অভিযোগ করেছে। কিন্তু রাশিয়া তা জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে এবং এই অভিযোগকে রুশ-বিদ্বেষী তৎপরতা বলে অভিহিত করেছে। মার্কিন ক্ষমতার মসনদে নব-নির্বাচিত বাইডেন- এর আরোহণের প্রাক্কালে রুশ বিরোধিতা তীব্র করে রাশিয়ার ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা জোরদারের জন্যই এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে রুশরা মনে করছেন।
নব-নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এসব হামলার কথিত সংঘটকদের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সাইবার হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর এই সাইবার হামলার ব্যাপকতা ছিল এতই বেশি যে আক্রান্ত মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো তাতে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
ট্রাম্প সরকার ২০১৮ সালে ঘোষিত নতুন সাইবার নিরাপত্তা কৌশলে বিদেশি হ্যাকারদের ওপর হামলার নীতি গ্রহণের কথা জানিয়েছিল ও সাইবার ক্ষেত্রে ফেডারেল সরকারের নিরাপত্তা রক্ষার অগ্রগণ্য বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা দিয়েছিল। এখন থেকে বিদেশী হ্যাকারদের ওপর হামলা জোরদার করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়েছিল ওই কৌশলে।
কিন্তু এখন স্পষ্ট হল যে মার্কিন সরকারের এসব হুমকি ছিল ফাঁকা বুলি মাত্র এবং ওয়াশিংটন তার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাইবার হামলার মুখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সান নিউজ/এসএম