আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দিল্লিতে চলন্ত বাসে মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্রীকে নির্যাতন, গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত চারজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। ধর্ষণে জড়িত ৪ আসামি হলেন অক্ষয় ঠাকুর সিং, মুকেশ সিং, পবন গুপ্তা ও বিনয় শর্মা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় দিল্লির তিহার কারাগারে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
তিহার কারাগারের ডিরেক্টর জেনারেল সন্দীপ গোয়েল জানিয়েছেন, ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ভোর সাড়ে ৩টায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে নির্ভয়ার খুনিদের।
কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘ সাত বছরের বেশি সময় ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের পর, শুক্রবার ভোরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে চার আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
খুনিদের ফাঁসি কার্যকরের পর এই দিনটিকে 'নির্ভয়া ন্যায় দিবস' হিসেবে পালন করতে আবেদন জানিয়েছেন তার বাবা। আর তার মা আশা দেবী বলেছেন, বিচার দেরিতে এসেছে তবে শেষ পর্যন্ত পার পায়নি খুনিরা।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর সাংবাদিকদের নির্ভয়ার মা বলেন, আমরা ভারতের মেয়েদের সুবিচার পাওয়ার জন্যে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাবো। তবে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্যে আমাদের এই দীর্ঘদিনের অপেক্ষা খুব কষ্টের ছিল। একসময় এই অপেক্ষা মানসিক যন্ত্রণা হয়ে উঠেছিল আমাদের কাছে। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি।
জানা গেছে, ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর আশা দেবী জড়িয়ে ধরেছিলেন নির্ভয়া নামে পরিচিত তার মেয়ের ছবিকে।
ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, দণ্ডপ্রাপ্তদের মৃত্যুদণ্ডের তারিখ পেছানোসহ বিভিন্ন আবেদনের কারণে ফাঁসির নির্ধারিত সময়ের পৌনে দুই ঘন্টা আগ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে চলেছে শুনানি।
তবে সব আবেদনই খারিজ করে আদালত, পরে রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে চূড়ান্ত রায় জানিয়ে দেন সুপ্রিম কোর্ট।
রায় ঘোষণার পর নির্ভয়ার মা সাংবাদিকদের বলেন, আজ অনেকটা শান্তি পেলাম। অবশেষে আমার মেয়ে সুবিচার পেলো। সারাদেশ এই অপরাধের জন্যে লজ্জিত ছিল। দেশবাসীও সুবিচার পেলেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন এক মেডিক্যাল শিক্ষার্থী। মিডিয়ায় ‘নির্ভয়া’স্বীকৃতি পাওয়া ওই নারী ১৩ দিন পর সিংগাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান।
এ ঘটনায় ভারতজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে বিক্ষোভকারীদের চাপে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে আইন পরিবর্তনেও বাধ্য হয় ভারত সরকার।
এ ঘটনায় চার আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়। আর বাসটির চালক রাম সিং কারাগারে আত্মহত্যা করে। অপর এক আসামি অপরাধের সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় তিন বছর সংশোধন কেন্দ্রে থাকার পর মুক্তি পায়।
সান নিউজ/সালি