আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সপ্তাহান্তে শীর্ষ স্তরে আলোচনার পর ব্রেক্সিট পরবর্তী সম্পর্কের লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ব্রিটেনের আলোচনার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ডিসেম্বর) ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের আগে বিষয়টির নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েছে ভেলে লিখেছে, আট মাসে যা সম্ভব হলো না, মাত্র দুদিনে সেই অসাধ্যসাধনের প্রচেষ্টা কতটা ফলপ্রসু হবে, সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে না। ইইউ ও ব্রিটেনের মধ্যস্থতাকারীরা সপ্তাহান্তে হাল ছেড়ে দেয়ার পর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু শনিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন টেলিফোনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর শেষ চেষ্টা চালাতে সম্মত হন। তারই আওতায় রোববার ও সোমবার দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীরা আবার মুখোমুখি হচ্ছেন।
সোমবার (৭ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জনসন ও ফন ডেয়ার টেলিফোনে কথা বলে হয়তো চূড়ান্ত ঘোষণা দিতে পারেন। সোমবারই সব বিষয়ের নিষ্পত্তি না হলে আলোচনার সময়সীমা আরও বাড়ানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
আগামী বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি ব্রিটেন পাকাপাকিভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করলে দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্যসহ বাকি সম্পর্ক স্থির করতে চুক্তি এখনো অধরাই রয়ে গেছে। চুক্তি স্বাক্ষর ও অনুমোদনের জন্য সময়ও প্রায় শেষ। আগামী বৃহস্পতিবার ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি চূড়ান্ত করতেই হবে।
সেই অনুযায়ী নতুন বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রস্তুতি নিতে হবে। চুক্তি সম্ভব হলেও সীমান্তে ব্যাপক যানজট ও জটিলতার আশঙ্কা রয়েছে। চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ক্ষেত্রে সেই মাত্রা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক গার্ডিয়ানের দাবি, ব্রিটেনের জলসীমায় ইইউ দেশগুলোর জেলেদের মাছ ধরার অধিকার নিয়ে বিরোধ মিটে গেছে। ফলে বিরোধের তিনটি বিষয়ের মধ্যে একটির নিষ্পত্তি হয়েছে। ব্রিটেনের সরকারের এক সূত্র অবশ্য এমন সাফল্যের দাবি অস্বীকার করেছেন। ইইউ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করে নি৷
ভবিষ্যতেও অভ্যন্তরীণ বাজারের নাগাল পেতে হলে ব্রিটেনকে ইইউ পরিবেশ, সামাজিক ও শ্রম সংক্রান্ত মানদণ্ড মেনে চলার শর্ত দেয়া ছাড়াও বিরোধ মেটাতে স্পষ্ট আইনি প্রক্রিয়াও স্থির করার দাবি জানাচ্ছে ইইউ। এই দুটি বিষয়েরও নিষ্পত্তি হলে চুক্তি সম্ভব হতে পারে। তবে সোমবারই সেই সাফল্য নাও আসতে পারে।
ব্রিটেনের সঙ্গে ইইউর দরকষাকষির ক্ষেত্রে বিশেষ করে ফ্রান্স অত্যন্ত কড়া অবস্থান নিচ্ছে। ব্রিটেনকে খুব বেশি ছাড় দেয়া হলে সে দেশ এমনকি চুক্তি বানচাল করতে ভেটো প্রয়োগ করার হুমকিও দিয়ে রেখেছে। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড নিজস্ব স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখতে চুক্তি চাইছে।
ইইউ কমিশন তথা ইইউ মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে আলোচনার কাঠামোর সীমা অতিক্রম না করে দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবার তিনি ইইউ রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাচ্ছেন।
সান নিউজ/পিডিকে