আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘ধর্মীয় বিচ্ছিন্নতাবাদ’ রোধের নামে ব্যাপক ও নজিরবিহীন পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে ফ্রান্স সরকার। এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ‘ধর্মীয় চরমপন্থা’ ছড়ানো হচ্ছে সন্দেহে ৭৬টি মসজিদে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
তাদের সন্দেহ সত্যি প্রমাণ হলে মসজিদগুলো বন্ধ করে দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন।
তিনি বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) এক টুইট বার্তায় এ কথা জানান। আরটিএল রেডিওতে তার সাক্ষাৎকারের কথা টুইট বার্তায় উল্লেখ করে তিনি জানান, আগামী দিনগুলোতে ফ্রান্সের ৭৬টি মসজিদে নজরদারি করবে সরকার। আমাদের সন্দেহ নিশ্চিত হলে আমি মসজিদগুলো বন্ধ করতে বলব। এরই মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্দেহে অনথিভুক্ত ৬৬ জন অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
দারমানিন বলেন, ফ্রান্সের ২৬০০টিরও বেশি মুসলিম উপাসনালয়ের মধ্যে ৭৬টি মসজিদকে ফ্রান্সের রিপাবলিকান মূল্যবোধ এবং এর সুরক্ষার জন্য সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি মসজিদ প্যারিসে আর বাকিগুলো দেশের অন্যান্য স্থানে অবস্থিত। নতুন এ অভিযানের ফলে অনেক মসজিদ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া ১৮টি মসজিদের ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে কোন কোন এলাকার মসজিদে নরজদারি করা হবে, সে ব্যাপারে কিছু বলেননি তিনি।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লি ফিগারো জানায়, দারমানিন মসজিদ নজদারির বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন এরই মধ্যে সরকারের কাছে পাঠিয়েছেন।
গত অক্টোবরে ছাত্রদের বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সালামের (সা.) ব্যঙ্গচিত্র দেখানোয় প্যারিসের উপশহরে স্যামুয়েল প্যাটি নামে এক শিক্ষকের শিরশ্ছেদ করা হয়। এর জের ধরে পরে নাইসের একটি গির্জায় হামলা চালিয়ে তিন ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
এ দু’টি ঘটনার পর ফ্রান্সে মুসলিম সংগঠন ও মসজিদগুলো চরম চাপের মুখে পড়েছে। সম্প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর দারমানিন জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত তিন বছরে ৪৩টি মসজিদ বন্ধ হয়েছে।
ইউরোপীয় মুসলিমদের একটি বৃহৎ অংশ ফ্রান্সে বসবাস করে। ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের পর মুসলিমরাই ফ্রান্সের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। সূত্র: আল জাজিরা ও রয়টার্স।
সান নিউজ/এসএম