আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : মার্কিন সরকার পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতি গ্রহণ করে। এমনকি করোনা পরিস্থিতিতেও অমানবিক নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে। এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক সমাজ আমেরিকার এ নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক এলিনা দোহান বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে মার্কিন একতরফা নিষেধাজ্ঞার কারণে জাতিসংঘের অন্তত ২০ শতাংশ সদস্য দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি ইরানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে দেশটি করনা পরিস্থিতিতে মার্কিন অমানবিক নিষেধাজ্ঞায় মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে। জাতিসংঘের এই প্রতিবেদক করোনা সংকটকালেও একতরফা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, অনেক কোম্পানি ইরানে করোনা আক্রান্ত অসুস্থ রোগীদের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্র সরবরাহ করতে চাইলেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে সম্ভব হয়নি।
জাতিসংঘের এই প্রতিবেদক ওয়াশিংটনের বেআইনি ও অবৈধ দাবির কাছে মাথানত করতে তেহরানকে বাধ্য করার জন্য এ দেশটির ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির মার্কিন প্রচেষ্টার তীব্র সমালোচনা করেছেন।
বিশ্বের বহু দেশ এমনকি মার্কিন কংগ্রেসের অনেক সদস্য ইরানের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে ফেলার জন্য ওই দেশটির বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা ও সমালোচনা করেছেন। মার্কিন কংগ্রেসের অন্তত ৩০ জন সদস্য ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তারপরও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব সমালোচনা ও আহবানের কোন তোয়াক্কা করছেন না।
বাস্তবতা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইরানবিরোধী নীতি খুব একটা সফল হয়নি বরং তিনিই প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পড়েছেন। কারণ ওয়াশিংটনের মিত্ররাও ইরান ইস্যুতে ট্রাম্পের নীতির বিরোধিতা করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাইমন তিসদাল বলেছেন, যদিও ইরান ও ভেনিজুয়েলার মত দেশগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন সর্বোচ্চ চাপের কারণে ওই দেশগুলো কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে কিন্তু এটা নিশ্চিত যে যুক্তরাষ্ট্র তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না। আর করোনা পরিস্থিতিতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক, নৈতিক ও কৌশলগত দিক দিয়ে মারাত্মক ভুল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পে আরো দুই মাসেরও কম সময় ক্ষমতায় রয়েছে। এরইমধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুধু যে ইরানের বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চলেছেন তাই নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশকেও এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে বাধ্য করার চেষ্টা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারকর্মী ডগ হাস্টার বলেছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে করনা মোকাবেলায় ইরানের সরকার ও রেড ক্রিসেন্ট কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। এ অবস্থায় ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে জাতিসংঘের প্রতিবেদক যে বক্তব্য দিয়েছেন তা গুরুত্বপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।সূত্র-পার্সটুডে
সান নিউজ/পিডিকে/এস