আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের কৃষক আন্দোলনে পুলিশি নির্যাতন নিয়ে প্রতিবাদে মুখরিত কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। দিল্লী পদযাত্রার মুখে সমগ্র ভারতের কৃষক আন্দোলন আর বিক্ষোভ এখন ভারতের সীমানা ছেড়ে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও ভারতের কৃষকদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে ভারত সরকার। এতে বলা হয়েছে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করার অধিকার ট্রুডোর নেই।
মোদি সরকারের তৈরি নতুন ৩টি কৃষক আইন এবং পুরানো আইনে সংশোধনীর বিরুদ্ধে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকদের মধ্যে বিক্ষোভ চলছিল। গত দুই মাসে এ বিক্ষোভ সমগ্র ভারতের কৃষকদের মধ্যে বড় আন্দোলন হিসেবে অন্য মাত্রা পেয়েছে। ট্রলি-ট্রাক্টর নিয়ে হাজার হাজার কৃষক দিল্লি কার্যত ঘিরে ফেলেছেন।
পাঞ্জাব থেকে দিল্লির সীমান্তে আসার পথে তাদের পার হতে হয়েছে বিজেপি শাসিত হরিয়ানা। সেখানে কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কৃষকরা যতো এগিয়েছেন, ততোই তাদের উপর লাঠিচার্জ বেড়েছে। চালানো হচ্ছে কাঁদানে গ্যাস। রাতের অন্ধকারে ক্লান্ত কৃষকদের উপর জলকামান নিয়ে আক্রমণ করা হয়েছে।
কৃষকদের সঙ্গে প্রথমে হরিয়ানা এবং পরে দিল্লি পুলিশ যে আচরণ করেছে, তার প্রতিবাদ হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এবার প্রতিবাদ হলো সুদূর কানাডা থেকে।
উল্লেখ্য, কানাডায় বিপুল পরিমাণ পাঞ্জাবি থাকেন। কানাডার রাজনীতিতেও পাঞ্জাবিদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ রয়েছে। ফলে পাঞ্জাবের বিষয় সে দেশের সমাজ-রাজনীতিতে আলোচনার বিষয়। গত ৩০ নভেম্বর শিখ ধর্মগুরু গুরু নানকের জন্মতিথি ছিল।
কানাডার সংসদেও সে বিষয়ে আলোচনা হয়। গুরু নানককে সম্মান জানাতে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী ট্রোডো ভারতের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, ভারতের পুলিশ কৃষকদের সঙ্গে যে ব্যবহার করছে, তা অন্যায়। যে কোনও গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলনের অধিকার রয়েছে। তা খর্ব করা উচিত নয়। শুধু ট্রোডো নন, কনজারভেটিভ দলের নেতারাও একই কথা বলেছেন।
ট্রোডোই প্রথম আন্তর্জাতিক ব্যক্তি, যিনি ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের এক দিন পরে জবাব দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বিবৃতি দিয়ে জানান, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলার অধিকার কারও নেই। ট্রোডো যে মন্তব্য করেছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। ভারত একটি গণতান্ত্রিক সার্বভৌম দেশ। এ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর অধিকার কারো নেই। সূত্র : ডয়চে ভেলে।
সান নিউজ/এসএ/এস