সান নিউজ ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের রেভ্যুলিউশনারী গার্ডের কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেমানিকে হত্যার ঘটনার পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামও ৪ শতাংশের মতো বেড়ে গেছে।
এদিকে তাঁর মৃত্যূতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর প্রতিশোধের হুশিয়ারী দিয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইরত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সশস্ত্র শক্তিকে ইরান প্রায়ই ‘প্রতিরোধ বাহিনী’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এ প্রতিরোধ বাহিনীর বিকাশ এবং ইরানের প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে মেজর জেনারেল সোলেমানিকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবেই বিবেচনা করা হতো।
খামেনির ভাষণের কয়েক ঘণ্টা আগে ইরাকের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় সোলেমানি নিহত হন বলে ইরানের বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে।
ইরাকে মার্কিন দূতাবাসে ইরানঘনিষ্ঠ মিলিশিয়া বাহিনীর নেতৃত্বাধীন হামলা-ভাংচুরের কয়েকদিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সোলেমানিকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাল।
সোলাইমানি ইরানে হাজী কাসেম নামে পরিচিত। রেভ্যুলিউশনারি গার্ডের কুদস শাখার কামান্ডার হলেও অলিখিতভাবে পদমর্যাদায় তিনি দেশের যে কোন কর্মকর্তার উপরে ছিলেন। প্রায় ২২ বছর ধরে ধীরে ধীরে এ বাহিনী গড়ে তোলেন তিনি। বাহিনীর মূল কাজ ছিলো ইরানের বাইরে দেশটির সামরিক অবস্থা শক্তিশালী করা। এই ফোর্সর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে ভারসাম্য আনতে সক্ষম হন সোলাইমানি।
কুদস ফোর্সের সাথে কাজ করছে প্যালেস্টাইনের হামাস ও ইসলামিক জিহাদ, লেবাননের হিযবুল্লাহ এবং ইরাক, সিরিয়া, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি গ্রুপ। এই ফোর্সে কতজন যোদ্ধা রয়েছে তার সঠিক সংখ্যা জানা কঠিন। ইসরায়েল ও সৌদি আরবসহ অন্তত ১৫ থেকে ২০টি দেশে ছোটছোট যুদ্ধ লিপ্ত কুদ্স বাহিনী। যুদ্ধের সীমানাকে ইসরায়েলের সীমানায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন সোলাইমানি। এ কারণে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সবচে বড় শত্রুতে পরিণত হন তিনি।
ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে তেহরানের ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে ট্রাম্প বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন উত্তেজনা শুরু হয়।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এ উত্তেজনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে; কাশেম সোলেমানির মৃত্যু পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করতে সাহায্য করবে বলেও শঙ্কা পর্যবেক্ষকদের। আর তার প্রাথমিক প্রভাব এরই মধ্যে দেখা দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যের ওপর।
এদিকে কাসেম সোলেমানির পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারই একসময়ের সহকারী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল গনিকে। তাকে নিয়োগ দেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি।
সান নিউজ/ এমইপি