আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বব্যাপী মহামারি হিসেবে দেখা দিয়েছে করোনাভাইরাস। এরইমধ্যে প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ এর তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত এর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫,০৮০তে।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১২৭টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ জন।
চীনের মধ্যে আক্রান্ত ও মৃতের হার বেশি হলেও চীনের বাইরে ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের হার সবচেয়ে বেশি।
বৃহস্পতিবার নতুন করে আরো ১৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। এ নিয়ে সেখানে মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১,০১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে বুধবার সেখানে ১৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ইতালির সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি জানায়, এ পর্যন্ত সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ১১৩তে পৌঁছেছে। গোটা বিশ্বের মধ্যে ইতালিতেই এখন করোনা ভাইরাসের বিস্তার সবচেয়ে বেশি।
করোনা ঠেকাতে ইতালির উত্তরাঞ্চলকে অবরুদ্ধ করে রাখার পরেও এর বিস্তার ঠেকানো যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ইতালিজুড়ে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ ও জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। সব ধরনের ক্রীড়া আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সময়সীমাও।
এদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে কানাডায় জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ছে। অন্টারিওর ৪,৮০০ সরকারি স্কুল দুই সপ্তাহ ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, টরন্টোর সকল মসজিদে অনির্দিষ্টকালের জন্য জুমার নামাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কানাডিয়ান কাউন্সিল অব ইমাম এবং মুসলিম মেডিকেল এসোসিয়েশন অব কানাডার এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্ত্রী সোফি গ্রেগরি নিজেই তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আবারো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার খবর জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, আইসোলেশনে থাকা জাস্টিন ট্রুডোও সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তিনি অনলাইনে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন দেশের অভ্যন্তরে এবং দেশের বাইরে।
অন্যদিকে কানাডার বিরোধী দলের নেতা জাসমিত সিংও অসুস্থবোধ করায় স্বেচ্ছায় গৃহবন্দিতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে নতুন সব ভাইরাস মোকাবেলায় কানাডার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এজন্য করোনা মোকাবেলায় কানাডিয়ান ডাক্তার ব্রুস আইলওয়ার্ডের কাছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শরণাপন্ন হয়।
কারণ, তিন দশক ধরে পোলিও, ইবোলা, জাইকা, সার্স এই প্রতিটি ভাইরাসের বিরুদ্ধেই লড়ে সফল হয়েছেন এই চিকিৎসক। সেজন্য ডাক্তার ব্রুসকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে চীন এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ টিমের নেতা হিসেবে।
গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হয়। গেলো দুই সপ্তাহে ভাইরাসটি চীনের বাইরে ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে বুধবার বিশ্বজুড়ে মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
উৎপত্তিস্থল চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে চীনের বাইরে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়বে বলে জানান বিশ্লেষকরা।
সান নিউজ/সালি