আন্তর্জাতিক ডেস্ক . লকডাউনের কড়াকড়ি শিথিল করতে যাচ্ছে ফ্রান্স সরকার। দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক ঘোষণায় এ কথা জানিয়েছেন। সকল দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আবারও খোলার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার ( ২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ম্যাক্রোঁ বলেন, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় কঠিন সময় (সর্বোচ্চ সংক্রমণ) পার করেছে ফ্রান্স। ম্যাক্রোঁ এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, আগামী ক্রিসমাসের উৎসবে দেশের জনগন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদযাপন করতে পারবেন। তবে বার এবং রেস্টুরেন্ট আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকছে বলে জানান।
ফ্রান্সে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এপর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তিনি জানিয়েছেন, উৎসবের মৌসুমকে সামনে রেখে আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে লকডাইন শিথিল হতে শুরু করবে। সিনেমা হলগুলো পুনরায় খুলে দেওয়া হবে এবং ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
সোমবার দেশটিতে ৪ হাজার ৪৫২ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বরের পর এই সংখ্যা সর্বনিম্ন। ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনের ট্রায়াল সফল হওয়ার খবর বেশ আশা জাগাচ্ছে। ফ্রান্সে আগামী ডিসেম্বরের শেষের দিকে বা জানুয়ারির প্রথম দিকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
বয়স্ব এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকেই আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেছেন ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। যদি সংক্রমণের গতি কম থাকে তবে বার এবং রেস্টুরেন্ট আবারও চালু করার অনুমতি দেওয়া হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও আবারও শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, সম্ভাব্য করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবেলায় আমাদের সব কিছু করতে হবে। এমনকি তৃতীয় লকডাউন ঠেকাতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। টেলিভিশনে ভাষণের পর এক টুইট বার্তায় ম্যাক্রোঁ বলেন, লকডাউন চলাকালীন সময়ে সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রাখতে হবে। বার, রেস্টুরেন্ট, স্পোর্টস হল এখনই চালু করা যাবে না। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত না মানলে জরিমানা দিতে হবে বলেও জানান তিনি।
ম্যাক্রোঁ জানান, তিনি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং পরবর্তী দিনগুলো সর্বশেষ তথ্য জানাবেন। তিনি বলেন, লকডাউনের পরিবর্তে রাত্রীকালীন কারফিউ জারি হতে পারে। ক্রিসমাস ও নিউ ইয়ারের শুরুতে রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত কারফিউ থাকতে পারে।
চলতি মাসের শুরু থেকেই দ্বিতীয় লকডাউন জারি রেখেছে ফ্রান্স। শুধুমাত্র কাজের উদ্দেশে, প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র কিনতে, মেডিক্যাল সহায়তা এবং এক ঘণ্টা ব্যয়ামের জন্য বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছে লোকজন।