আন্তর্জাতিক ডেস্ক. ৭৮ বছর বয়সে বলিষ্ঠ যুবকের মতো দৃপ্ত কণ্ঠে জোর দিয়ে নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার আগের জায়গায় ফিরে আসবে। যুক্তরাষ্ট্র আবার বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। সেখান থেকে কোনোভাবেই পিছপা হবে না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) নিজের রাজ্য দেলাওয়ারের উইলমিংটনে এক বক্তব্যে তিনি তার পুরানো মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক আবারও গভীর করে গড়ে তোলার প্রত্যায় ঘোষণা করলেন। একই সঙ্গে ঘোষণা করলেন নতুন ক্যাবিনেটের অতি গুরুত্বপূর্ণ ৬টি পদে মনোনীতদের নাম।
তারা হলেন,সরকার পরিচালনার অতি গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে এ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এই ব্লিঙ্কেন এরই মধ্যে বলেছেন, অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের যে অবনমন সৃষ্টি হয়েছে তা পুনঃস্থাপন করবেন এবং আস্থা ফিরিয়ে আনবেন খুব শিগগিরই।
জলবায়ু পরির্বতন বিষয়ক দূত হিসেবে বাইডেন মনোনয়ন দিয়েছেন আরেক অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ জন কেরিকে। জন কেরি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে দীর্ঘ সময় পরিচিত মুখ। তিনি একবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু হেরে গেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ ডব্লিউ বুশের কাছে। প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক যে চুক্তি আছে, তার শীর্ষ স্থানীয় রূপকারদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
এই চুক্তি থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। জন কেরি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের যে সঙ্কট বিরাজমান তার শেষ হওয়া উচিত এবং এ জন্য বিশ্বকে অবশ্যই একত্রিতভাবে কাজ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক হিসেবে এভরিল হেইন্সকে মনোনয়ন দিয়েছেন।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন আলেজান্দ্রো মায়োরকাসকে। তিনি বলেছেন, তার মন্ত্রণালয় আদর্শ মিশন পরিচালনা করবে। যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ রাখতে সহায়তা করবে। যুক্তরাষ্ট্রের গর্বিত ইতিহাসকে সামনে এগিয়ে নেবে। হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল সিকিউরিটি উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন জ্যাক সুলিভান।
তিনি তার বস জো বাইডেনের প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনার অনেক কিছু তিনি তার কাছ থেকে শিখেছেন। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মানুষের প্রকৃতি। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ডকে। তবে নানা জল্পনা থাকা সত্ত্বেও তিনি কিন্তু ফেডারেল রিজার্ভের সাবেক প্রধান জ্যানেট ইয়েলেনের নাম ঘোষণা করেননি।
আলোচনা ছিল তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। তেমনটা হলে জ্যানেট ইয়েলেন হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কোনো নারী অর্থমন্ত্রী। তবে সময় এখনও শেষ হয়ে যায় নি।
উল্লেখ্য, সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে জো বাইডেন যেমন ইতিহাস রচনা করেছেন, তেমনি তিনি তার মন্ত্রীপরিষদে মনোনয়নের মাধ্যমেই ইতিহাস রচনা করেছেন। ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রথম নারী পরিচালক হিসেবে তিনি মনোনয়ন দিয়েছেন এভরিল হেইন্সকে। একই সঙ্গে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির প্রধান হিসেবে প্রথম ল্যাতিনো আলেজান্দ্রো মায়োরকাসকে মনোনয়ন দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হওয়া উচিত বলে সম্মতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তিনি নিজে এখনও পরাজয় স্বীকার করে নেননি। জো বাইডেনকে বিজয়ী বলে স্বীকৃতি দেননি। আবার তিনি ভোটের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। ফলে তিনি কখন কি বলছেন, কি করছেন তা বোঝা খুব কঠিন।