দাবানলে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির বড় একটা অংশে কালো ধোঁয়ার মেঘ। পরিবেশবিদরা বলছেন, সেই মেঘের আকার জাপানের চেয়ে ১৫ গুণ বড়! প্রায় ৫৫ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে সেটি। তাতে দেখা গিয়েছে, আইসল্যান্ড থেকে তুরস্ক— প্রায় গোটা ইউরোপকে ঢেকে ফেলার ক্ষমতা রাখে সেই ধোঁয়া। এখন তাসমান সাগর পেরিয়ে নিউজিল্যান্ড থেকেও দেখা যাচ্ছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। তার জেরে কালো হয়ে উঠছে নিউজিল্যান্ডের বহু হিমবাহ। দ্রুত গলতে শুরু করেছে বরফ। পর্যটক ও স্থানীয়দের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই ছবি। পরিবেশবিদরা বলছেন, মেঘের এই বিশালাকারেই বিপদ আন্দাজ করা যাচ্ছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার থেকে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় তাপমাত্রা আরও বাড়বে। দাবানলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নিউ সাউথ ওয়েলস আর ভিক্টোরিয়ার তাপমাত্রা বেড়ে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। দাপট বাড়বে ঝোড়ো হাওয়ারও। এই দুই প্রদেশে রোজই নতুন নতুন আগুন লাগার খবর মিলছে। ভিক্টোরিয়ার লেক কনজোলায় এখনও পর্যন্ত ১৭৫টি বাড়ি পুড়ে ছাই। শহর ছেড়ে সমুদ্রের দিকে পালাচ্ছে মানুষ।
পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, বেশ কয়েকটি প্রজাতি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুবিজ্ঞানীদের অনুমান, পুড়ে মারা গিয়েছে অন্তত ৫০ কোটি পশু-পাখি-সরীসৃপ। তাদের মধ্যে ৮০০০ কোয়ালা।
এদিকে, দাবানল কবলিত শহর মাল্লাকোটায় আটকা পড়া শত শত হাজার হাজার মানুষ উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনী। নৌবাহিনীর জাহাজ এইচএমএএস চউলস একবারে আটশো মানুষ উদ্ধার করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। উদ্ধার তৎপরতা সমন্বয় করছে নিরাপত্তা বাহিনী। আগ্রহীদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে জাহাজে চড়ার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।