নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতিসংঘে মিয়ানমারের মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ অন্যান্য সহিংসতার শিকার নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিম ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি জাতিসংঘ ১০৪টি দেশের সদস্য রাষ্ট্রের শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ ও অকুন্ঠ সমর্থনে নতুন প্রস্তাব গৃহিত। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি শীর্ষক প্রস্তাবটি পুনরায় গৃহীত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ১৯ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চতুর্থবারের মতো এ প্রস্তাব গ্রহণের কথা জানানো হয়েছে। ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে উত্থাপিত প্রস্তাবটি ১০৪টি দেশের পৃষ্ঠপোষকতার কথা উল্লেখ করে প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয় ১৩২টি দেশ, বিপক্ষে ৯টি আর ভোট দানে বিরত থাকে ৩১টি দেশ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসির সদস্য রাষ্ট্র ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ডসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আন্তঃআঞ্চলিক জোটের সমর্থন ও সহ-পৃষ্ঠপোষকতা পায় প্রস্তাবটি।
প্রস্তাবটিকে ধারাবাহিকভাবে সমর্থন জানানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা। তিনি বলেন, “১০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয়দানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে এই সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজছে, যা নিহিত রয়েছে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের মধ্য “।
এই প্রস্তাব বাংলাদেশসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে গঠনমূলক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে মিয়ানমারকে নতুনভাবে চাপ সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে চলমান বিচার ব্যবস্থা এবারের রেজ্যুলেশনের ফলে আরও বেশি আন্তর্জাতিক সমর্থন পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের সাময়িক আদেশ, আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের তদন্ত শুরুর বিষয় এবং রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে বঞ্চিত করার মতো নতুন বিষয়গুলো উঠে এসেছে এবারের প্রস্তাবে।
এছাড়া প্রস্তাবে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যও মিয়ানমারকে আহ্বান জানানো হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানসহ সমস্যাটির মূল কারণ খুঁজে বের করা, প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা।
প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির পদক্ষেপ হিসেবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়টিও রয়েছে। বাংলাদেশ গৃহীত মানবিক প্রচেষ্টায় সমর্থন দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে প্রস্তাবে।
প্রস্তাবটিতে ভোট দেওয়ার আগে এর সমর্থনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে জার্মানির স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ওআইসির পক্ষে সৌদি আরবের স্থায়ী প্রতিনিধি বক্তব্য দেন।
সান নিউজ/এসএ/এস