আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ছে। সংক্রমণ রোধে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্য ও শহরে নতুন করে বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে। তবে এ পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী লকডাউন জারির ব্যাপারে আগ্রহী নন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের করোনাভাইরাস বিষয়ক পরামর্শক বোর্ডের দুই সদস্য।
পরামর্শক বোর্ডের দুই সদস্য ড. বিবেক মূর্তি ও ড. অতুল গাবান্দে উভয়েই করোনা সংক্রমণ রোধে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির তেমন প্রয়োজন নেয় বলে মতামত তুলে ধরেছেন। এর পরিবর্তে স্থানীয়ভাবে যেমন নিউইয়র্ক ও এর আশপাশের এলাকায় এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে বিধি-নিষেধ আরোপ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের প্রফেসর ড. গাবান্দে এবিসি নিউজকে বলেন, দেশব্যাপী লকডাউন জারির বিষয়ে আমাদের সমর্থন নেই। তবে স্থানীয়ভাবে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, যেমন- মাস্ক পরা, করোনার নমুনা পরীক্ষা বাড়ানো ইত্যাদি।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে দায়িত্বরত সার্জন জেনারেল ও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের করোনাবিষয়ক পরামর্শক বোর্ডের সদস্য ড. বিবেক মূর্তিও ফক্স নিউজকে একই কথা বলেছেন।
করোনা সংক্রমণ বাড়লে দেশব্যাপী লকডাউন জারি করা হবে কি-না, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সর্বশেষ উপায় হিসেবে এটা করা যেতে পারে। তবে লক্ষ্য নির্ধারণ না করে যদি দেশজুড়ে লকডাউন জারি করে দিই, তাহলে করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের ভেতর তৈরি যে অবসাদ সেটা আরও বেড়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, কাজ বন্ধ করে দিলে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হবে। এদিকে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দিলে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ক্ষতি হবে। তাই আমরা দেশজুড়ে লকডাউন জারি না করে স্থানীয়ভাবে কিছু বিধিনিষেধ জারি করতে পারি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত ৯ নভেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ কোটি। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই দেশটিতে আরও প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ১ কোটি ১৬ লাখ ৯৫ হাজার ৭১১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৫৫ জনের।
প্রথম থেকেই করোনা সংক্রমণকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা এতো বেশি বলে ধারণা করা হয়। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, তার স্ত্রী ও ছেলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও এ বিষয়ে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
এদিকে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন করোনার ব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, আসন্ন সরকার গঠনে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সহযোগিতা না করলে আরও বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে ট্রাম্প বা তার প্রশাসনের তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
সান নিউজ/এসএম