আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আলোচিত বিচারপতি এস মুরলীধরের বিদায় উপলক্ষ্যে অভূতপূর্ব বিদায় সংবর্ধনা দিল দিল্লি আইনজীবী ও জনগণ। বৃহস্পতিবার সেই বিদায় সংবর্ধনার সাক্ষী হয়ে রইল দিল্লি হাইকোর্ট। প্রথা ভেঙে গান গেয়ে, শের শুনিয়ে তাকে বিদায় দেন আইনজীবীরা।
দিল্লিতে হিন্দুত্ববাদী তাণ্ডবের সময় উস্কানিমূলক বিবৃতি দেওয়ার জন্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছিলেন এই বিচারপতি। দাঙ্গায় আক্রান্তদের রক্ষায় পুলিশ যখন নিরব তথন তিনিই প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে।
আর সেই অপরাধেই কিনা এক রাতের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার তাকে পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলির নির্দেশ দেন। এরপরই শুরু হয় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাইকোর্টের হল ঘরে পা রাখার জায়গা ছিলনা। সিঁড়ি ও ব্যালকনির প্রতি ইঞ্চিতে শুধুই কালো ব্লেজার পরিহিত আইনজীবীদের ভিড়। কোনও বিচারপতির বিদায় সংবর্ধনায় এমটা আর দেখেনি ভারত। এমন অনুষ্ঠানে গান বা কবিতা ব্রাত্যই থাকে। প্রথা ভেঙে দিল্লি সরকারের আইনজীবী রাহুল মেহরা প্রথমে ‘একলা চলো রে’ গাইলেন।
তার পর তিনি উর্দুতে শের শোনালেন, ‘ম্যায় আকেলা হি চলা থা জানিব-এ-মঞ্জিল মগর লোগ সাথ আতে গয়ে অউর কারবাঁ বনতা গয়া’।
বিদায় সংবর্ধনার আগে প্রধান বিচারপতির এজলাসে সমস্ত বিচারপতিরা একত্র হয়ে তাঁকে সম্মান জানান। দুর্বল-প্রান্তিক মানুষের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য সমাদৃত মুরলীকে দিল্লি হাইকোর্টের ‘কোহিনুর’ বলেও সম্মোধন করেন উপস্থিত আইনজীবীরা। তারা বলেন, দিল্লি হাইকোর্টের ‘কোহিনুর’ আজ আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছেন।
মুরলীধরের সংবর্ধনায় হাজির হয়েছিলেন হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এ পি শাহ। এই দুই বিচারপতির বেঞ্চই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা খারিজ করে দিয়ে রায় দিয়েছিলেন যে সমকামিতা অপরাধ নয়।
অনুষ্ঠানে বিচারপতি মুরলীধর বলেন, সে দিন এজলাসের মধ্যেই যেভাবে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তখনই বুঝেছিলাম কিছু অপরিবর্তনীয় ঘটনা ঘটছে।
সান নিউজ/সালি