আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সামরিক জান্তার শাসনমুক্ত হওয়ার পর মিয়ানমার সরকার সেখানে দ্বিতীয় নির্বাচনের পথে হাঁটছে। কিন্তু এ নির্বাচনেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত। বার্তা সংস্থা সিএনএন অনলাইন সংবাদে লিখেছে, নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় যেতে পারেন অং সান সুচি ও তার দল। ২০১৫ সালের নির্বাচনে তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি ভূমিধস বিজয় পায়।
এরপর ৫০ বছর দেশকে সামরিক কর্তৃত্বের অবসান ঘটিয়ে প্রথম সুচি নেতৃত্বে আসে বেসামরিক সরকার। তারপর কেটে গেছে ৫ বছর। এর মধ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার নারকীয়তায় বিশ্ববাসী যখন ধিক্কার দিচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে। তখন মানবতার নেত্রী সুচি ছিলেন একেবারেই নিশ্চুপ। উপরন্ত তিনি সেনাবাহিনীর পক্ষ নিয়ে সেনাবাহিনীকে রক্ষা করতে হেগে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) দাঁড়িয়েছেন।
সারাবিশ্বে এ জন্য তার কড়া সমালোচনা থাকলেও সুচি এখনও জাতিগত বার্মা সংখ্যাগরিষ্ঠদের কাছে জনপ্রিয়। তারা মনে করছে, তিনি আবার ক্ষমতায় ফিরবেন। কিন্তু ২০১৫ সাল আর ২০২০ সাল এক নয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পশ্চিমাদের চোখে এ সময়ের গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পরিচিত সুচি এখন আর গণতন্ত্রের প্রতীক নন।
কারণ, তিনি রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনী নৃশংসতার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ। সেনাবাহিনীর এই নৃশংসতাকে জাতিসংঘ জাতিনিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এর পলে কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। বেঁচে থাকা রোহিঙ্গারা বর্ণনা করেছেন তাদের ওপর চালানো নৃশংসতা।
রোহিঙ্গা নারীদের গণধর্ষণ করা হয়েছে। গণহত্যা চালানো হয়েছে। নির্যাতন করা হয়েছে। সম্পদ ধ্বংস করে দিয়েছে সাধারণ মানুষের। এখনও রাখাইনে যেসব রোহিঙ্গা আছেন তারা রয়েছেন বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। তাদেরকে জেলখানায় বসবাসের মতো অবস্থায় সেখানে বাস করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাদের চলাচলে, শিক্ষা গ্রহণে এবং স্বাস্থ্যসেবায় রয়েছে বিধিনিষেধ।
মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ফোর্টিফাই রাইটসের সিনিয়র বিশেষজ্ঞ জন কুইনলে বলেছেন, এখনও রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার ইেন। তাদেরকে ১৯৮২ সালের বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইনের অধীনে পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার দেয়া হয়নি। রোহিঙ্গাদেরকে শুধু ভোটাধিকার থেকেই বঞ্চিত করা হয়নি। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের বাইরে রাখা হয়েছে।
সান নিউজ/এসএ/এস