আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দোহা থেকে সিডনি ফেরার পথে কাতার এয়ারওয়েজের নারী যাত্রীরা অবমাননাকর আচরণের মুখোমুখি হয়েছেন। ১৩ জন যাত্রীর প্রত্যেকের পরনের পোশাক খুলে পরীক্ষা করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ।
এ মাসের শুরুর দিকে দোহার হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের টার্মিনালের টয়লেট থেকে এক নবজাতকে উদ্ধার করা হয়। নবজাতকের পরিচয় উদঘাটনের জন্য কাতার এয়ারওয়েজের ওই ফ্লাইটের নারী যাত্রীদের পোশাক খুলে পরীক্ষা করা হয় কেউ সদ্য সন্তান জন্ম দিয়েছেন কি না। এসময় তাদের পাসপোর্টও জমা রাখা হয় বলে খবর প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়াকে বলেন, প্লেনে ওঠার পর হঠাৎ ঘোষণা দিয়ে প্লেন থেকে নামিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের দোহার বিমানবন্দর টারমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের মধ্যে কেউ সন্তান জন্ম দিয়েছেন কি না দেখতে অন্তত তিন ঘণ্টা ধরে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনকে উলফগ্যাং বাবেক নামের এক যাত্রী জানান, ফিরে আসার পর ওই নারী যাত্রীদের মন খারাপ থাকতে দেখেছেন। এমনকি একজন অল্পবয়েসী মেয়ে কাঁদছিল।
এ ঘটনায় অস্ট্রেলিয়া জুড়ে ক্ষোভ আর অবিশ্বাসের ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। কাতারে নারীদের সঙ্গে যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি কাতারের সঙ্গে সবধরনের কূটনৈতিক যোগাযোগ বন্ধের হুমকি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ।সরকার থেকে বলা হয়েছে ওই যাত্রীরা সেসময় কিছু বলার সুযোগ পাননি।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিস পেইন ঘটনাটিকে ‘চরম বিরক্তিকর, ‘আপত্তিকর এবং উদ্বেগজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে ওই ১৩ নারীর সঙ্গে কোনো ধরনের যৌন সহিংসতা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। কাতারের প্রতিক্রিয়া জানার পর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সিনডি ফেরত ওই নারী যাত্রীরা এখন ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে আছেন এবং সরকার থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন মেরিস পেইন।
এদিকে ২ অক্টোবর ঘটে যাওয়া এই ঘটনা সম্পর্কে এখনো কোনো মন্তব্য দেয়নি কাতার সরকার। তবে হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সদ্য সন্তান জন্ম দেওয়া এক মায়ের স্বাস্থ্য বিষয়ে উদ্বেগ জানান এবং বিমানবন্দর ত্যাগের আগে তাকে খুঁজে বের করার অনুরোধ করেন। নবজাতকের পরিচয় এখনো খুঁজে বের করা যায়নি। স্বাস্থ্যকর্মীরা তার দেখাশোনা করছে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/এসএম