ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
দিল্লির সহিংসতায় বাড়ছে লাশের মিছিল। সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল চার। মঙ্গলবার রাত শেষে সে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ তে। এনডিটিভি জানিয়েছে, সেখানে আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ, এদের মধ্যে কমপক্ষে ৭০ জন গুলিবিদ্ধ।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের মধ্যেই ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের সমর্থক এবং বিরোধীদের সংঘাত আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
মঙ্গলবার রাতে জাফরাবাদ, মৌজপুর, চাঁদবাগ, কারওয়াল নগরে সান্ধ্য আইন (কারফিউ) জারি করে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা দিল্লির মূখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অনুভব করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, যথেষ্ট সিআরপি নামানো হয়েছে। এখনই সেনা ডাকার দরকার নেই।
পরিস্থিতি সামলাতে গোটা উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে আগামী এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। দিল্লি-সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদেও ১৪৪ ধারা জারি হয়। নিয়ন্ত্রিত করা হয় গাজিয়াবাদ-দিল্লির সীমানায় যাতায়াতের ওপর। এছাড়া দুদিন টানা বন্ধ রয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির পাঁচটি মেট্রোস্টেশন।
বিবিসি বলছে, দফায় দফায় সংঘর্ষে মঙ্গলবার রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল দিল্লির মুসলমান অধ্যুষিত উত্তর-পূর্বাঞ্চল। দিল্লিতে গত কয়েক দশকেও এমন সহিংসতা দেখা যায়নি।
এদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই উন্মত্ততা বন্ধ করে হিন্দু-মুসলিম উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। উত্তেজনা না ছড়াতে বেসরকারি টেলিভিশনগুলোকে সংঘাতের খবর প্রচারের ক্ষেত্রে সাবধান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এ সংঘাতের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত ২৪ ঘণ্টায় তিনটি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ছিলেন আইপিএস অফিসার এসএন শ্রীবাস্তব। পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করার পর মঙ্গলবার তাকে বিশেষ পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারপরও সেখান থেকে একের পর এক মৃত্যুর খবর আসতে থাকে।
এ সময় সহিংসতায় আহতদের জরুরি চিকিৎসা ও জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের প্রতি নির্দেশনা জারি করে আদেশ দেন দিল্লির হাইকোর্ট।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আর কোনও উসকানিমূলক বক্তব্য না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দিল্লির সঙ্গে উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানা রাজ্যের সীমান্ত পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।