ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
গণতন্ত্র চর্চার পাদপীঠ মনে করা হত ভারতকে। জনসংখ্যার দিক থেকেও ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু সেই ভারতের গণতান্ত্রিক সব রীতিনীতি একে একে মুছে দিচ্ছে দেশটির হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার। ভুলে যাচ্ছে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে রাজনীতির অনেক শিষ্টাচার কিংবা বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। যার সবশেষ উদাহরণ ভারত সফরে আসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সন্মানে রাষ্ট্রপতির দেয়া নৈশভোজে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে আমন্ত্রন না জানানো। আর তারই প্রতিবাদ হিসেবে আমন্ত্রন পাওয়া সত্বেও রাষ্ট্রপতি ভবনের নৈশভোজ বয়কট করেছেন কংগ্রেসের সংসদীয় দলের প্রধান অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ভারতের বিরোধী দলীয় নেতাদেরকে শ্রদ্ধা করার অতীত সংস্কৃতির চরম বিচ্যুতি বলে বিষয়টিকে অভিহিত করেছেন তিনি।
ভারতের বার্তা সংস্থা আইএএনএস (ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস)-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে অধীর বলেন, ‘দুই বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্টের প্রতিনিধি হিসাবে মুখোমুখি হবেন ট্রাম্প ও মোদী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী যখন আমেরিকা গিয়েছিলেন সেই সময় হাউডি মোদী-তে সেদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দলের প্রতিনিধিরা ছিলেন। কিন্তু ট্রাম্পের নৈশভোজে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী আমন্ত্রণ পাননি।’
তিনি বলেন, কংগ্রেস নেত্রীকে আমন্ত্রণ না জানানো পুরো কংগ্রেসকে অপমান করার শামিল। পাশাপাশি তাঁর দাবি, গণতন্ত্র যদি এখন মোদীর পথে চলে তবে সরকার পক্ষের জানা উচিত যে, কংগ্রেস ভারতের ১৩৪ বছর পুরনো একটি দল। বিশ্বের সমস্ত দেশেই কংগ্রেস স্বীকৃত। ফলে এমন পরিস্থিতিতে ওই নৈশভোজো যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানান বাঙালি এই সাংসদ।
মোদীর প্রতি কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে অধীর বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীর অভিধানে গণতন্ত্রের অর্থ বদলে গিয়েছে। এখন শুধুই মোদী শো। যেন ভারত মানেই মোদী।’
আগামী ২৪ ও ২৫ ফ্রেব্রুয়ারি দুদিনের সফরে ভারতে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উদ্বোধন করবেন গুজরাটে নির্মিত বিশ্বের সর্ব বৃহৎ স্টেডিয়াম ‘মোতেরা’। তাকে
স্বাগত জানাতে উপস্থিত রাখা হবে ৭০ লাখ মানুষকে।
ভারত সফরের আগে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হবে না বলে ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পরে অবশ্য তিনি বলেছেন, ভারত-আমেরিকার মধ্যে অল্প পরিমাণে বানিজ্য চুক্তি হবে। ট্রাম্পের সফরে ভারতের কোনও লাভ হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন অধীর চৌধুরী। মোদির সফরকে কটাক্ষ করে আইএএনএস’এর কাছে তাঁর মন্তব্য, ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৩১ জন কৃষক যেখানে আত্মহত্যার প্রস্তুতি নেয়, সেখানে কোটি কোটি রুপি খরচে মোদি সরকার ব্যস্ত ট্রাম্পকে সন্তুষ্টি করতে।
উল্লেখ্য, অধীর রঞ্জন চৌধুরী একমাত্র বাঙালী যিনি লোকসভার ইতিহাসে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন প্রথম।