আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
অনেকদিন ধরেই বিশ্বের কাছে এক আতঙ্কের নাম করোনা বা কোভিড ১৯ ভাইরাস। প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এ পর্যন্ত চীনে মারা গেছেন ২৩৬০ জন। আর চীনের বাইরে মৃতের সংখ্যা ১৫ জন।
এরইমধ্যে কোভিড ১৯ বিশ্বের ২৯ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৭৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চীন তো রিতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। চীনের পাশাপাশি অন্যান্য দেশও কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে, কিন্তু মৃত্যুর মিছিল থামছেই না।
এ অবস্থায় কোভিড ১৯ এর প্রাদুর্ভাবের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে বলে গুজব ছড়াচ্ছে রাশিয়া, এ অভিযোগ খোদ যুক্তরাষ্ট্রের।সুত্র: এএফপি
মার্কিন কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, রাশিয়ার সামাজিক মাধ্যমেগুলোতে হাজার হাজার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করোনাভাইরাস নিয়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। খবরে বলা হয়েছে, ভুয়া ফেসবুক, টুইটার ও ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গুজবে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের পেছনে নাকি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) হাত রয়েছে।
এনিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী ফিলিপ রিকার এএফপির কাছে অভিযোগ করে বলেন, করোনাভাইরাসের উৎস সম্পর্কে রাশিয়া ভুল তথ্যের বীজ বুনতে চেষ্টা করছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছে রাশিয়া।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা তাসকে বলেছেন, এটা একেবারেই ভিত্তিহীন মিথ্যা গল্প।
এদিকে চীনের মূল ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ২শ ৮৮ জনে । পাশপাশি চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩ শ ৪৫ জনে।
চীনে দুইমাস ধরে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া কোভিড ১৯ এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতির উপর। চীন দ্বিতীয় বৃহত্ অর্থনীতির দেশ হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীততেও।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে চলতি বছরের প্রথম দুই মাস জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে চীনের ক্ষতি হতে পারে ১৮ হাজার ৫০০ কোটির ডলারেও বেশি। কারণ হিসেবে অর্থনীতিবীদরা বলছেন ভোক্তা ব্যয় এবং পর্যটন খাতের কথা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী সম্প্রতি এমন আশঙ্কার খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক দিনেই বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এক কর্মীর দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর স্যামসাং ইলেক্ট্রনিক্স তাদের মোবাইল ফোন তৈরির একটি কারখানা বন্ধ রেখেছে।
দায়েগু শহরের কাছে গুমিতে স্যামসাংয়ের ঐ কর্মীর দেহে শনিবার করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। এরপরই ওই কারখানা সোমবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে স্যামসাং কর্তৃপক্ষ।
দেশটির সেন্টার্স ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার ২২০ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর এ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩৩ জনে।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
সান নিউজ/সালি