সান নিউজ ডেস্ক:
উহানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের স্বাস্থ্যসেবার কাজ করা নার্সদের মাথার চুল ফেলে দেয়া হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, জোরপূর্বক তাদের চুল ফেলতে বাধ্য করছে উহানের একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রায় এক ডজন নার্সের চুল কেটে ফেলা হচ্ছে। এসময় কয়েকজনের চোখে পানিও দেখা যায়। এ থেকেই শুরু হয় বিতর্ক।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভিডিওতে যেসব নারীকর্মীদের দেখা গেছে তারা স্বেচ্ছায় উহানে গিয়ে চিকিৎসা দিতে চেয়েছেন এবং তাদের চুল কাটার বিষয়টিও জোরপূর্বক নয়।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য করতে দেখা গেছে। অনেকেই দাবি করছেন, এ কাজ জোরপূর্বক করা হচ্ছে। আবার অনেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবিকে মেনে নিয়েছেন।
এরইমধ্যে করোনার চিকিৎসা দিতে গিয়ে প্রায় ২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনার প্রথম সনাক্তকারী চিকিৎসক সহ মারা গেছেন ৬ জন ডাক্তার, আর একজন হাসপাতাল পরিচালক। এরপর আর ঝুঁকি নেননি চিকিৎসক ও নার্সরা। সংক্রমণের সমস্ত পথ বন্ধ করতে চুল কেটে ফেলেছেন নারী স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এতে দুটি উপকার হবে বলে মনে করছেন তারা। প্রথমত, চুলের মাধ্যমে প্রাণঘাতী জীবাণুর সংক্রমণ এড়ানো যাবে। দ্বিতীয়ত, হাসপাতালে প্রবেশের পর যে সুরক্ষাবর্ম তাদের পরতে হয়, তা বদল করাও অনেক সহজসাধ্য এবং কম সময়ের মধ্যে হবে।
শনিবার স্থানীয় পত্রিকা গানসু ডেইলি প্রথম এই ফুটেজটি প্রকাশ করে। তারা জানায়, চুল কাটার পর ওই কর্মীদের লানঝো শহরে পাঠানো হয়। সেখানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা প্রদান করবেন তারা। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে এ কাজ করেছে যাতে তারা আলোচনায় আসতে পারে।
অনেকে আবার এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বলছেন, তারা এমনিতেই মাথা আটকে কাজ করেন। তাছাড়া তাদের চুল এমনিতেও খুব বেশি বড় ছিল না। তারপরেও এমন নিষ্ঠুরভাবে তাদের চুল কেটে ফেলা হলো কেনো সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তারা।
এদিকে, দ্য কোয়ার্টজ জানিয়েছে, মূলত কভিড-১৯ মোকাবিলায় চীনা নার্সদের সাহসিকতা, ত্যাগের বিষয়টি ফুটিয়ে তুলতে ওই ভিডিও প্রকাশ করেছিল গানসু ডেইলি। কিন্তু এতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে নেটিজেনদের মধ্যে। অনেকে বলেছেন, এতে সাহসিকতার চেয়ে অপমান বেশি ফুটে ওঠেছে।