আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিক্ষোভ-সমাবেশ প্রতিহত করতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে থাই সরকার। জরুরি অবস্থা কার্যকরের পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। সরকার সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষ এড়াতে দুই পক্ষের মাঝে অবস্থান নেন বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী। এসময় বিরোধীপক্ষকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছাকাছি যেতে বাধা দেন তারা।
টেলিভিশনে এক ঘোষণায় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যাংককে বেআইনিভাবে অনেক লোকজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং বিশাল জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে, শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জরুরি অবস্থা জারির প্রয়োজন ছিল। থাই রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করেই সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে থাইল্যান্ড।
বুধবার ব্যাংককে থাই রাজার গাড়িবহরকে উদ্দেশ্য করে বিক্ষোভ শুরু করে হাজার হাজার মানুষ। বিরোধীরা থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি বছরের বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকা রাজা ভাজিরালংকর্নের ক্ষমতা কমানোর দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচারও পদত্যাগ চান তারা।
এদিকে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, বিক্ষোভকারীরা বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে এবং জনগণের শান্তি নষ্ট করছে।
বুধবার বিক্ষোভকারীদের বিরোধিতায় ব্যাংককের রতচাদম্নোয়েন অ্যাভিনিউয়ে সমবেত হয়েছিলেন রাজ পরিবারের সমর্থকরাও। তাদের অনেকেই রাজকীয় হলুদ রঙের টি-শার্ট পরে এসেছিলেন।
সরকার সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষ এড়াতে দুই পক্ষের মাঝে অবস্থান নেন বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী। এসময় বিরোধীপক্ষকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছাকাছি যেতে বাধা দেন তারা।
দেশজুড়ে কড়াকড়ির কারণে চারজন ব্যক্তি একসঙ্গে জড়ো হতে পারবেন না। এমনকি গণমাধ্যমের ওপরও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় লোকজনের প্রবেশেও সীমাবদ্ধতা আনা হয়েছে।
থাইল্যান্ডে রাজা বা রাজ পরিবারের বিরুদ্ধাচরণ গুরুতর অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। রাজার সমালোচনা করলে দীর্ঘ কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে দেশটিতে।
তবে ছাত্রদের নেতৃত্বে গত জুলাইয়ে থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিশাল বিক্ষোভ শুরু হয়। চলতি সপ্তাহেও দেশটির রাজধানীতে গত কয়েক বছরের মধ্যে বৃহত্তম বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, গত শনিবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ১৮ হাজার মানুষ সমবেত হয়েছিলেন। যদিও এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে দাবি করেছেন কেউ কেউ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জরুরি অবস্থা কার্যকরের পর বিক্ষোভকারীদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে থেকে সরিয়ে দেয় দাঙ্গা পুলিশ।
থাইল্যান্ডে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আইনজীবীরা বলছেন, বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া তিন নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সূত্র : বিবিসি।