ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
চীনের উইঘুর মুসলিমদের ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের খবর অনেক পুরনো। ২০১৭ সালে উইঘুর মুসলমানদের জন্য বন্দীশিবির চালু করে চীনা কর্তৃপক্ষ। নিজ ধর্মের কোন আচার বা রীতিনীতিই স্বাভাবিকভাবে পালন করতে পারেন না এই সম্প্রদায়টি। দাড়ি রাখা, বোরখা পরা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য চীনের উইঘুর মুসলিমদের অনেককে বন্দি করা হচ্ছে। সম্প্রতি উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতনের নতুন ফাঁস হওয়া দলিলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
নতুন করে ফাঁস হওয়া দলিলে চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলে তিন হাজারের বেশি নাগরিকের দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় খুঁটিনাটিসহ ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিবিসি জানিয়েছে, গত বছর শিনজিয়াং অঞ্চলের যে সূত্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সরকারি নথি পাওয়া গিয়েছিল, এবারও সেই সূত্রের মাধ্যমেই নতুন দলিলপত্র পাওয়া গেছে।
১৩৭ পৃষ্ঠার দলিলে প্রতিটি পৃষ্ঠায় ভিন্ন ভিন্ন কলাম এবং ছক কেটে ঐ মানুষেরা কতবার নামাজ পড়েন, কী পোশাক পরেন, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের আচার আচরণের বিস্তারিত লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
তবে, চীনের সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে এগুলো দেশটির সন্ত্রাসবাদ এবং ধর্মীয় উগ্রপন্থা মোকাবেলায় নেয়া পদক্ষেপের অংশ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দলিল অত্যধিক ব্যক্তিগত ঝুঁকি নিয়ে সংগ্রহ করা হয়েছে।
শিনজিয়াংয়ে চীনা নীতির একজন বিশেষজ্ঞ ড. অ্যাড্রিয়ান জেনজ, যিনি ওয়াশিংটনে ভিক্টিমস অব কম্যুনিজম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের একজন সিনিয়র ফেলো, তিনি মনে করেন ফাঁস হওয়া এসব দলিল আসল।
নতুন দলিলে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়ের ৩১১ জন মানুষের ব্যাপারে ব্যাপকভিত্তিক অনুসন্ধানের অর্থাৎ তাদের পূর্ব ইতিহাস, ধর্মীয় আচার পালনের দৈনন্দিন রুটিন, তাদের আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী এবং বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের বিস্তারিত তথ্য রয়েছে এসব দলিলে। রিপোর্টের শেষ কলামে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে, ঐ ব্যক্তিদের বন্দিশিবিরে আরও রাখা হবে, নাকি তাদের ছেড়ে দেয়া হবে, অথবা আগে ছেড়ে দেয়া হয়েছে এমন কাউকে আবার বন্দি শিবিরে ফিরিয়ে আনতে হবে কিনা।
প্রাপ্ত দলিল বিশ্লেষণ করে ড. জেনজ বলছেন, এসবের মাধ্যমে ওখানে চলা সিস্টেমের ব্যাপারে ধারণা যেমন পাওয়া যায়, তেমনি ক্যাম্পে থাকা মানুষের ‘আদর্শিক ও মনস্তাত্ত্বিক কাঠামো’ অনুযায়ী তাদের বিভক্ত করে পর্যালোচনা করার ব্যাপারেও ধারণা পাওয়া যায়।