আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা পিএলও'র সামরিক শাখা ইসরাইলি কারাগারে আটক ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দির খাদ্য অনশনের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইলকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে বন্দিদের কোন ক্ষতি হলে সেটা কে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে ধরে নেব।
ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারে প্রায় ৪৮০০ ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছে যাদের মধ্যে ৪১ জন নারী এবং ১৪০ জন শিশু রয়েছে। এসব বন্দীরা ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের শিকার। ফিলিস্তিনের বন্দী বিষয়ক কমিটির প্রধান আব্দুন নাসের পারওয়ানে বলেছেন ১৯৬৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২২২ জন ফিলিস্তিনি বন্দী কারাগারে শাহাদাত বরণ করেছেন। তাদের একেক জনের মৃত্যুর ধরন ছিল একেক রকম। অন্তত ৭৫ জন বন্দী মানসিক ও শারিরিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন।
ইসরাইলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আহত হয়ে পরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মারা গেছে সাতজন। এছাড়া ৬৭ জন রোগী ওষুধ ও চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে। এছাড়া অকথ্য নির্যাতনের কারণে আর মারা গেছে আরো বহু ফিলিস্তিনি।
ইসরাইলি জেলখানাগুলোতে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের অবস্থা কখনই ভাল ছিলনা। কিন্তু এখন করোনাভাইরাসের কারণে জেলখানাগুলোর পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
ফিলিস্তিনি বন্দীদেরকে চিকিৎসার সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ইসরাইলি অমানবিক কর্মকাণ্ডের একটি বড় দৃষ্টান্ত হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত একদল চিকিৎসককে জেলখানায় পাঠিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বন্দীদেরকে তাদের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দেয়া হচ্ছে না। এ বিষয়টি পরিবারের সদস্যদেরকে আরো উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। জেলখানার কঠিন ও অমানবিক পরিবেশের প্রতিবাদে বন্দিরা অনশন কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফিলিস্তিনের বিভিন্ন সংস্থা বন্দীদের অবস্থা উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে।
ইসলামিক জিহাদ আন্দোলন, পিএলও এবং হামাসের ৩০ জন বন্দী খাদ্য অনশন চালিয়ে যাচ্ছে। বন্দীদের খাদ্য অনশন কর্মসূচির অন্যতম কারণ হচ্ছে তাদের দুরবস্থার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজ ও মানবাধিকারের দাবিদার বৃহৎ শক্তিগুলোর নীরবতার প্রতিবাদ জানানো।
এদিকে দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে কয়েকটি আরব দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার কারণে বন্দীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের ক্ষেত্রে ইসরাইল আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় ইসরাইলি জেলখানায় আটক ফিলিস্তিনিরা অনশনের মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদকে অন্য জাতিগুলোর কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছে যাতে আন্তর্জাতিক সমাজ ইসরাইলি অপরাধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
সান নিউজ/এসএম