আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মহামারি করোনাতে স্তবির সারা বিশ্ব। বেকার হয়ে পড়েছে বহু মানুষ দেখা দিয়েছে ব্যবসায় মন্দা। মহামারিকালে সামাজিক দূরত্ব ব্যাপক আলোচিত হলেও সমাজে শ্রেণি বিভাজন যে আরও প্রকট হয়েছে সেই আলোচনা কিন্তু উঠছে যৎসামান্যই। প্রাণঘাতী অতি সংক্রামক ভাইরাসটির প্রকোপে সব অচল হয়ে দরিদ্র কোটি কোটি মানুষ অতি-দরিদ্র হলেও বিশ্বজুড়ে শতকোটিপতিদের সম্পত্তি কিন্তু বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী সুইস ব্যাংক থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, মহামারি যখন সবচেয়ে প্রকট; সেই এপ্রিল থেকে জুলাইয়ে ধনকুবেরদের সম্পত্তি ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ বা ১০ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি বেড়েছে। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি কামিয়েছেন প্রযুক্তি ও শিল্প খাতের কর্তাব্যক্তিরা।
শতকোটিপতিদের সম্পত্তি বাড়ার রেকর্ড হয়েছে এবার। এর আগে তাদের সম্পত্তি ফুলে-ফেঁপে ওঠার ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালে। বিশ্ববাজারে শেয়ারের মূল্য বাড়ায় তখন এ পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলার। সুইস ব্যাংক বলছে, কোভিড-১৯ সংকটকালেও শতকোটিপতিরা ‘খুব ভালো’ করেছেন। শতকোটিপতির সংখ্যাও রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। ২০১৭ সালে সংখ্যাটি ২ হাজার ১৫৮ থাকলেও এখন তা ২ হাজার ১৮৯ জন।
চলতি বছরে সম্পত্তি বৃদ্ধির তালিকায় বড় জায়গা দখল করে আছে শিল্পপতিরা। এপ্রিল-থেকে জুলাই সময়কালে শিল্পপতি ধনকুবেরদের সম্পত্তির পরিমাণ ৪৪ শতাংশ বেড়েছে।ব্যাংকটি বলছে, ‘লকডাউন নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার কারণে বিশ্ব অর্থনীতির গতি ফিরতে শুরু করায় কোম্পানির বাজারমূল্য বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে একপেশেভাবে সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে শিল্পপতিদের।’
বেশ ‘ভালো’ একটি মহামারি পার করেছেন প্রযুক্তি খাতের ধনকুবেররা। করোনায় তাদের সম্পত্তির পরিমাণ ৪১ শতাংশ বেড়েছে। সুইস ব্যাংক বলছে, করোনায় সামাজিক দূরত্ব আর লকডাউন নিষেধাজ্ঞার কারণে ঘরিবন্দি মানুষের কাছে তাদের পণ্য ও সেবার চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ফুলে ফেঁপে উঠেছে তাদের সম্পত্তি।বৈশ্বিক এক স্বাস্থ্যসংকটের ফায়দা তুলেছেন স্বাস্থ্যখাতের ধনকুবেররাও। কারণ করোনায় স্পটলাইটে চলে এসেছে ওষুধ ও স্বাস্থ্য সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর। তাদের পণ্যের চাহিদা ছিল আকাশচুম্বি।
সুইস ব্যাংকের গ্লোবাল ফ্যামিলি বিভাগের প্রধান জোসেফ স্ট্যাডলার বলছেন, মহামারিকালে ধনীদের সম্পত্তি বেড়েছে কারণ পড়তি শেয়ারবাজারে গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কেনার মতো সামর্থ্য তাদের আছে। এদিকে অধিকাংশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা ধনীদের, ফলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দর বেড়েছে। জেফ বেজোসের ২ হাজার ৯৯০, বিল গেটসের ১ হাজার ১৯, বারনার্ড আরনল্টের ১ হাজার ২৮০, মার্ক জাকারবার্গের ৩ হাজার ১৪০, ল্যারি পেজের ১ হাজার ৪২০, মুকেশ আম্বানির ১ হাজার ৯৯০, ম্যাকেনজি বেজোসের ১ হাজার ৪০ এবং ইলন মাস্কের ৯৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সম্পত্তি বেড়েছে।