আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এশিয়ার দুই দেশ আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। প্রতিবেশী দেশ হলেও বহুদিন ধরেই দু'দেশের মধ্যে বৈরি সম্পর্ক বিরাজমান। সেই বৈরিতায় ফের আগুন জ্বলছে দুটি দেশের মাঝে। বিতর্কিত নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে ব্যাপক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
সপ্তাহ পেরুতে চললেও বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখের নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এরিমধ্যে প্রায় আড়াইশ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। প্রাণ বাঁচাতে যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চল ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
এদিকে, আর্মেনিয়ার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ক্ষমা চাওয়াসহ বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট। যুদ্ধের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তুরস্ককে মধ্যস্থতার দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সামরিক জোট ন্যাটো।
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ককেশাসের বিরোধপূর্ণ অঞ্চলটিতে এক সপ্তাহ ধরে পাল্টাপাল্টি হামলায় যুদ্ধের ভয়াবহতা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। গোলার পাশাপাশি রকেট, বিমান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির দাবি করেছে উভয় পক্ষ। প্রাণ বাঁচাতে যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে আর্মেনিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে পারি দিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে নতুন করে আরো বেশ কিছু গ্রাম আজারবাইজানের সেনারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে দাবি করেছে বাকু। দেশটির প্রতিরক্ষা দফতরের প্রকাশিত ভিডিওতে তালিশের একটি গ্রামে সেনাদের আজারবাইজানের পতাকা উড়াতে দেখা যায়।
জাবরাইলের নয়টি জেলা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে মুক্ত করায় আজারবাইজানের সেনাদের অভিনন্দন জানান প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। একইসঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য বেশ কিছু শর্তও জুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, নাগরনো-কারাবাখে আঞ্চলিক অখণ্ডতা প্রতিষ্ঠাই তাদের মূল লক্ষ্য।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বলেন, বছরখানেক আগে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কারাবাখ আর্মেনিয়ার। আজারবাইজানের জনগণের কাছে তার ক্ষমা চাইতে হবে। দ্বিতীয়ত তাকে বলতে হবে কারাবাখ আর্মেনিয়ার নয়। তাকে আজারবাইজানের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তাকে সুস্পষ্ট করে বলতে হবে ঠিক কখন কোন এলাকা থেকে তাদের সেনাদের সরিয়ে নেবে।
এদিকে, দু পক্ষের সংঘর্ষে ইরানের সীমান্তবর্তী পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মর্টার হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতে দেশটির মাটিতে যে কোন হামলার ব্যাপারে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়াকে সতর্ক করেছে ইরান।
আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের এই বৈরি অবস্থার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো। যুদ্ধ বন্ধে আজারবাইজানকে সরাসরি সমর্থন দেয়া তুরস্ককে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান জোটের মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ।
সান নিউজ/বিএম/এস