আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ এর আসল ছবি প্রকাশ করলেন মার্কিন গবেষকরা। ছবি হাতে পাবার পর বেশ অবাকই হয়েছেন তারা। কারণ ২০০২ সালের সার্স ও ২০১২ সালের মার্স ভাইরাসের সঙ্গে এর মিল রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধরনের দ্রুত সংক্রমণযোগ্য ভাইরাসগুলো মাইক্রোস্কোপে প্রায় একইরকম দেখা যায়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (এনআইএআইডি) ছবিগুলো প্রকাশ করে। ল্যাবে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন স্ক্যানিং অ্যান্ড ট্রান্সমিশন ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে তারা করোনাভাইরাসের ছবি ধারণ করেন। করোনাভাইরাসের চিত্রগুলি সহজে দেখার জন্য রঙিন করেন গবেষকরা।
এনআইএআইডির মলিকিউলার প্যাথোজেনেসিস ইউনিটের প্রধান এমি ডি উইট প্রথমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর লালা সংগ্রহ করেন। এরপর তা টেস্টটিউবে নিয়ে এলিজাবেথ ফিশারকে দেন। এই এলিজাবেথ ফিশার একজন মাইক্রোস্কোপ বিশারদ। তিনি মাইক্রোস্কোপের ওই নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করলে তাতে জীবাণুসহ এর ছবি ধরা পরে।
এদিকে প্রথমবারের মতো ফ্রান্সে করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ইউরোপে এটিই প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। ১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এ মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়।
শুধু ফ্রান্স নয়, চীনের পর কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, নেপাল, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান ও হংকংসহ আরো প্রায় ২৫টি দেশে ইতোমধ্যেই ছড়িয়েছে করোনা। আগেই ভাইরাসটিকে বিশ্ববাসীর জন্য ‘মারাত্মক হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক ইথিওপিয়ার টেডরস আধানম গেব্রিয়াসেস বলেছেন, ভাইরাসটি ‘যেকোনো সন্ত্রাসবাদী পদক্ষেপের চেয়েও শক্তিশালী’ হতে চলেছে।
মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার অন্তত তিন মাস আগেই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি নিয়ে সতর্কতা জারি করেছিলেন । তারা সতর্ক করে এও বলেন, পরবর্তী ১৮ মাসের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদি তাই হয় তাহলে করোনার মহামারিতে বিশ্বের প্রায় সাড়ে ছয় কোটি মানুষ উজাড় হয়ে যাবেন ।
করোনা ভাইরাসে চীনে এরইমধ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৩৩ জনে। এতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ হাজার ৪৯২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৪১ জন। যা আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। তবে সর্বশেষ যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে চারজন ছাড়া বাকি সবাই চীনের হুবেই প্রদেশের।
গত বছরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। এরপর থেকেই চীনে ও চীনের বাইরে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা।
সান নিউজ/সালি