আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য জাতিসংঘের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনঃর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বাংলাদেশকে এ সমস্যার জন্য তহবিল নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
আরও পড়ুন: মেক্সিকোতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪১
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান শুক্রবার আসন্ন জাতিসংঘের রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে নিয়ে আলোচনা করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।
এদিকে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে এই সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব কক্সবাজার জেলার ও রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের কথা স্মরণ করে তাদের জন্য তার উদ্বেগ পুনঃর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা নিয়মিত বৈষম্য ও মৌলিক অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের শিকার।
এছাড়াও তিনি ৮ বছর ধরে মিয়ানমারের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অব্যাহত উদারতার প্রশংসা করেন। তার এই সংকটময় মুহূর্তে রাখাইনে জাতিসংঘের নেতৃত্বে মানবিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের অপরিহার্য ভূমিকার স্বীকৃতি দেন।
আরও পড়ুন: হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দিবিনিময়
এ সময় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য জরুরি আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের গুরুত্ব তুলে ধরেন, যা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
অপরদিকে, ড. খলিলুর রহমান মহাসচিবকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত করার জন্য অনুরোধ করেন। যাতে এই বছর অনুষ্ঠাতব্য সম্মেলনে সমস্যার দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
ড. খলিলুর রহমান রাখাইনের গুরুতর মানবিক পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন এবং সতর্ক করে দেন যে, আসন্ন দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সংঘাতপূর্ণ রাজ্যটিতে আরও অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে।
তিনি হ্রাস পাওয়া বৈদেশিক তহবিল পরিস্থিতির দিকে জাতিসংঘ মহাসচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং পর্যাপ্ত সম্পদ সংগ্রহের জন্য তার সদিচ্ছার আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসকে সাহায্য প্রদানকারী ও গ্রহীতাদের নিরবচ্ছিন্ন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ জানান।
এ সময় সেখানে সহিংসতা, ভয়ভীতি, বৈষম্য ও স্থানচ্যুতি থেকে মুক্ত রাখতে এবং বিমান ও বোমা হামলা বন্ধ নিশ্চিতেরও আহ্বান জানানো হয়।
আরও পড়ুন: গাজায় নিহত প্রায় ৬২ হাজার
ড. রহমান মহাসচিবকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংস্কার প্রচেষ্টা সম্পর্কেও অবহিত করেন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের আরও শক্তিশালী ভূমিকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
এরই জবাবে, মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টার সাথে তার সাম্প্রতিক বৈঠকের কথা স্মরণ করেন এবং সংস্কার প্রচেষ্টার প্রতি দৃঢ় সমর্থন পুনঃর্ব্যক্ত করেন।
সান নিউজ/এমএইচ