আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সপ্তাহ পেরুতে চললেও বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখের নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এরিমধ্যে ২৩০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন।
বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের কর্তৃত্ব নিয়ে ইউরোপের দেশ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ক্রমে বেড়েই চলছে। আজারবাইজানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গাঞ্জায় হামলা চালিয়েছে আর্মেনিয় বাহিনী। সোমবারের অনলাইন প্রতিবেদনে সবশেষ এই হামলার খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আনুষ্ঠানিকভাবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আজারবাইজানের অংশ হলেও আর্মেনিয় খ্রিস্টান নৃগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ-লড়াই চলছে।
নাগোরনো-কারাবাখের স্বঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সরকার বলছে, আঞ্চলিক রাজধানী স্টেপ্যানকার্টে আজেরি বাহিনীর গোলা বর্ষণের পর তারা আজারবাইজানের গাঞ্জা শহরের সামরিক বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।
রোববার (৪ অক্টোবর) এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আর্মেনিয়ার সেনা গাঞ্জায় গোলা বর্ষণ করেছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় এই শহর নাগোরনো-কারাবাখের উত্তর সীমানায় অবস্থিত।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জাকারি হাসানোভ পরে বলেন, এটা স্পষ্টই উসকানি মূলক পদক্ষেপ এবং এর ফলে সংঘাত বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তবে গাঞ্জায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি আজারবাইজান। তবে হামলায় বেশ কিছু ভবন ধ্বংসের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া এই সংঘাত-লড়াইয়ে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানির কথা জানা গেছে। তবে এই সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি বলেই ধারণা। নিহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সেখান থেকে সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গঠিত নতুন এই দেশ দুটির মধ্যে বারবার সংঘাত ও লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তবে নব্বইয়ের দশকের পর এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা। ভয়াবহ এই সংঘাতের জন্য উভয় পক্ষই বিরোধীর পক্ষকে দোষারোপ করে আসছে।
আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের সেনারা রোববার থেকে সাতটি গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। অপরদিকে নাগোরনো-কারাবাখ বলছে, তাদের সেনরা সম্মুখে নিজেদের অবস্থান আরও সংগত করেছে।
যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য রাশিয়া, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে চলতি সপ্তাহের শুরুতে জানিয়েছে আর্মেনিয়া। কিন্তু এরপর শুক্রবার রাত থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ আবার শুরু হয়। শনিবারের সংঘর্ষে আরও ৫১ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছিল নাগোরনো-কারাবাখ।
প্রকাশ্যে তুরস্ক সমর্থিত আজারাবাইজান নাগারনো-কারাবাখ এবং সংলগ্ন এলাকাগুলো থেকে আর্মেনিয়ার সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। বিতর্কিত এই অঞ্চলটি নিয়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভূক্ত দেশ দুটি ১৯৮৮-৯৪ পর্যন্ত যুদ্ধ জড়িয়েছিল। পরে যুদ্ধবিরতি হলেও এ নিয়ে কোনো স্থায়ী সমাধান এখনও হয়নি।
সান নিউজ/ বিএম/এস