ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
জাহাজ তীরে এসে ভিড়েছে ১০ দিন হলো। কিন্তু নামার সুযোগ মেলেনি। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরের কাছে আটকে পড়েছে ক্রুজ শিপ ডায়মন্ড প্রিন্সেস।
জাহাজটিতে যাত্রী রয়েছে তিন হাজার ৭০০ জন। তার মধ্যে ১৭৪ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। মূলত এ করণেই জাহাজ থেকে কাউকে নামতে দেয়নি জাপানী কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারির আগে তাদের সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে টোকিয়োর বন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছে জাহাজটি। প্রতিদিনই ভিডিওবার্তায় দেশের ফেরার জন্য আকুতি জানাচ্ছেন আটকে পড়ারারা।
যাত্রীদের কাছে বিষয়টি এখন খাঁচাবন্দি পরিস্থিতি। জাহাজ কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা ভাইরাস রুখতে এছাড়া আর বিকল্পও নেই তাদরে কাছে।
জাহাজে থাকা ভারতীয় কর্মী বিনয়কুমার সরকার বলেন, জাহাজে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। প্রতি যাত্রীকে থার্মোমিটার, মাস্ক-সহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। সেই সব নিয়ে অভিযোগ নেই। কিন্তু করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা তো বেড়েই চলেছে। এতে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।
জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার আক্রান্ত ৪০ জনকে ৯টি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৯ জন যাত্রী, ১০ জন ক্রু এবং একজন কোয়ারান্টাইন কর্মকর্তা।
ওই জাহাজ ছাড়া জাপানে এখন পর্যন্ত ২৯ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে চীনে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২৪২ জনের। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১৪ হাজার ৮৪০ জন।
সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা জানায়, চীনের মধ্য প্রদেশ হুবেইয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, করোনা ভাইরাসে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৩৫৫ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬০ হাজার ১১ জন।
হুবেই স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরের শেষ দিন প্রথমবারের মত করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এমনকি আগের দিনগুলোতে ২৪ ঘণ্টায় যতজন মারা গেছেন, এর চেয়ে দ্বিগুণের বেশি।
গত কয়েক দিন হুবেই প্রদেশে নতুন রোগীর সংখ্যা কমতে থাকায় আশাবাদী হয়ে উঠতে শুরু করেছিলেন চীনা চিকিৎসকরা।
চীনে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জয় নানশান বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলতি মাসেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে। এপ্রিলের দিকে বিপদ পুরোপুরি কেটে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গত বছরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু সংখ্যা। এছাড়া চীনের বাইরেও ২৫টির বেশি দেশে করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে।