আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এর মাধ্যমে দেশটির প্রায় আড়াইশো বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এক মেয়াদের বিরতিতে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: পরাজয় মেনে ট্রাম্পকে কমলার শুভেচ্ছা
মূলত অভিবাসন, অর্থনীতি এবং ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিরে আসতে চলেছেন হোয়াইট হাউসে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, নিজের বিজয় ভাষণে ট্রাম্প “একটি সাধারণ নীতিবাক্য দ্বারা দেশ শাসনের” প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর তা হলো- “প্রতিশ্রুতি দেওয়া, প্রতিশ্রুতি রাখা। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে যাচ্ছি।”
১) অনথিভুক্ত অভিবাসীদের নির্বাসন: নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় মার্কিন ইতিহাসে অনথিভুক্ত অভিবাসীদেরকে সবচেয়ে বড় গণ বিতাড়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কাজও সম্পূর্ণ করার অঙ্গীকার করেছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদের সময় ওই প্রাচীর নির্মাণ শুরু হয়েছিল।
২) অর্থনীতি, ট্যাক্স এবং শুল্কের ওপর পদক্ষেপ: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক্সিট পোল বা বুথফেরত জরিপের প্রাথমিক তথ্যে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন ভোটারদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে যে দুটি ইস্যু তার একটি হচ্ছে- অর্থনীতির অবস্থা। ট্রাম্প “মুদ্রাস্ফীতির অবসানের” প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
৩) জলবায়ু সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কমানো: মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম মেয়াদে শত শত পরিবেশগত সুরক্ষা বিধিনিষেধ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আমেরিকাকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকেও প্রত্যাহার করেছিলেন তিনি।
৪) ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান: টানা আড়াই বছর ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তায় রশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা করছে কিয়েভ। রাশিয়ার সাথে এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে আলোচনার চুক্তির মাধ্যমে “২৪ ঘণ্টার মধ্যে” সংঘাত শেষ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০
৫) গর্ভপাত নিষিদ্ধ নয়: কমালা হ্যারিসের সাথে প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কের সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি জাতীয় গর্ভপাত নিষেধাজ্ঞার আইনে স্বাক্ষর করবেন না। নিজের কিছু সমর্থকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়েই ট্রাম্প একথা বলেছিলেন।
৬) ৬ জানুয়ারির ঘটনায় কিছু দাঙ্গাকারীকে ক্ষমা করবেন: ২০২১ সালের গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটলে জো বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যৌথ অধিবেশন বসেছিল কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং উচ্চকক্ষ সিনেট সদস্যদের। অধিবেশন চলাকালে সেখানে হামলা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কয়েক হাজার উন্মত্ত সমর্থক।
৭) স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথকে বরখাস্ত করবেন: প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার “দুই সেকেন্ডের মধ্যে” স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথকে বরখাস্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। প্রবীণ এই প্রসিকিউটর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি তদন্তের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল বাতিলের কথিত প্রচেষ্টার জন্য এবং গোপন নথিগুলোর ভুল ব্যবস্থাপনার জন্য ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করেছেন। তবে ট্রাম্প কোনো ধরনের অন্যায় কাজ করার কথা অস্বীকার করেছেন এবং নির্বাচনের আগে উভয় ক্ষেত্রেই বিচারের মুখোমুখি হওয়া রোধ করতে সক্ষম হয়েছেন। সূত্র: বিবিসি
সান নিউজ/এএন