আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিপাইনে শক্তিশালী মৌসুমী ঝড় ত্রামির আঘাত এবং তার ফলে সৃষ্ট প্রবল বর্ষণ-বন্যা-ভূমিধসে অন্তত ৪০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
আরও পড়ুন : পাকিস্তানে তালেবানের হামলা, নিহত ১০
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জেআর বলেছেন, “বিকোলে এই প্রথম ভূমিধস এবং তার জেরে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এর আগে কখনও ওই অঞ্চলে ভূমিধস ঘটেনি। বিকোলের নাগা এবং লেগাজপি শহর ও এই শহর দু’টির আশপাশের অঞ্চলে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষয়ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি।”
বৈরি আবহাওয়ার কারণে এখনও দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা সেভাবে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা শুরু করতে পারেননি উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট আরও জানান, “বৃষ্টিপাত এখনও অব্যাহত রয়েছে। মাটি পুরোপুরি সিক্ত ও নরম হয়ে যাওয়ায় ভূমিধসের ঝুঁকিও অনেক বেশি। আবহাওয়া পরিস্থির খানিকটা উন্নতি হলে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতাতেও গতি আসবে।”
আরও পড়ুন : লেবাননে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৩
বিকোল পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা আন্দ্রে ডিজন বলেন, “গত দু’দিনে বিকোলে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা দু’মাসের মোট বৃষ্টিপাতের সমপরিমাণ। বন্যার কারণে মানুষজন বাড়ির ছাদে অবস্থান নিয়েছে। আমরা আশা করছি, আজ কিংবা আগামী কালের মধ্যে বৃষ্টি থামবে। বৃষ্টি থামলে বন্যার পানিও নেমে যাবে।”
প্রাদেশিক পুলিশের কর্মকর্তা নেলসন কাবুসো এএফপিকে বলেন, “বাতাঙ্গাসে গত ২ দিনে ৬ জন নিহত হয়েছেন। প্রদেশের অন্যান্য এলাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে কি না— তা নজরদারির মধ্যে রাখতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টি-বন্যা ও ভূমিধসের কারণে প্রদেশ অনেক অঞ্চলের যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় সেসব এলাকায় পৌঁছানো যাচ্ছে না।”
আরও পড়ুন : ওড়িশায় আছড়ে পড়েছে ডানা
ত্রামির প্রভাবে গত ২৩ অক্টোবর থেকে পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রবিদ্যুৎসহ ভারী বর্ষণ শুরু হয় ল্যুজোনে। ২৩ তারিখ রাতে বিকোল ও তার আশপাশের এলাকা বন্যা শুরু হওয়ার পর উপদ্রুত বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯৩ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর।
প্রসঙ্গত, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে ঝড়-ঝঞ্ঝা, ও ভারী বর্ষণের মতো দুর্যোগ নিয়মিতই ঘটে ফিলিপাইনে। দেশটির আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ফিলিপাইনের বিভিন্ন প্রদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যায় ছোট-বড় অন্তত ২০টি ঝড়। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জেরে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হার বাড়ছে।
সান নিউজ/এমআর