আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
সীমান্তের বিতর্কিত অঞ্চল নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে দুই দেশের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর একে অপরের সঙ্গে শান্তি আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। গত তিনদিনে এই যুদ্ধে শতাধিক সামরিক ও বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। একে অপরের প্রতি হামলা অব্যাহত রেখেছে দুই দেশ। খবর আল জাজিরার।
যুদ্ধ নিয়ে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, আলোচনার কোনো সম্ভাবনা নেই। একই সংবাদমাধ্যমকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পশিনিয়ান বলেন, লড়াইয়ের সময় কোনো আলোচনা হতে পারে না।
খবরে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে যুদ্ধে নাগর্নো-কারাবাখ ছাড়াও দুই দেশের সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়েছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। যুদ্ধ পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যুদ্ধ বন্ধের জন্য আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনালাপে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এই যুদ্ধ দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার পার্শ্ববর্তী দেশ রাশিয়া, তুরস্ক এবং ইরানের মধ্যেও এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন দেশ।
মঙ্গলবার আজারবাইজন-আর্মেনিয়া ইস্যুতে বৈঠকে বসে জাতিসংঘ নিরাপত্ত পরিষদ। সেখানে এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জাতিসংঘ মহাসচিব দুই দেশের শক্তি প্রয়োগের নিন্দা জানিয়ে তাৎক্ষণিক যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান।
অতীতে দেশদুটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। গেল চার দশক ধরে অমীমাংসিত অঞ্চলটি নিয়ে দুদেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। নাগারোনো কারাবাগ আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজেনের স্বীকৃত অঞ্চল হলেও, অঞ্চলটি এখনও নিয়ন্ত্রণ করে আর্মেনিয়ানরা।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অঞ্চলটিকে দখলে নেয় খ্রিষ্টান অধ্যূষিত আর্মেনিয়া। আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে কারাবাগকে দখল করে নিতে তারা প্রায় ৩০ হাজার লোককে হত্যা করে তারা।
যদিও ১৯৯৪ সালে একটি শান্তি চুক্তির মাধ্যমে এই যুদ্ধের অবসান ঘটে। ফ্রান্স, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া এই শান্তি চুক্তি ২০১০ সালে ভেঙে যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে উত্তেজনা বৃদ্ধিতে দুদেশেই একে অপরকে দায়ী করে আসছে।