আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন। আগামী ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তিনটি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম বিতর্কটি ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফক্স নিউজের সংবাদকর্মী ক্রিস ওয়ালেস এই বিতর্ক অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেছেন।
তবে বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জন্য বেশি মানুষকে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সীমিত সংখ্যকই এতে অনুমতি পেয়েছেন। নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই দর্শকদের আসন বিন্যাস করা হয়েছে।
এই বিতর্কে দর্শকদের মাস্ক পরে আসার নিয়ম থাকলেও ট্রাম্পের পরিবারের অনেক সদস্যই সেখানে মাস্ক ছাড়াই উপস্থিত হয়েছিলেন।
এই দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর সঙ্গে ক্রিস ওয়ালেস বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি ট্রাম্প এবং বাইডেনের বিভিন্ন রেকর্ড, সুপ্রিম কোর্ট, মাইক কোভিড-১৯, অর্থনীতি, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরের সহিংসতা এবং নির্বাচনের অখণ্ডতা নিয়ে কথা বলেছেন।
এদিকে, আগামী ৭ অক্টোবর কমলা হ্যারিস এবং মাইক পেন্স প্রথম বিতর্কে অংশ নেবেন। এই বিতর্কের কয়েক ঘণ্টা আগেই নিজেদের আয়কর রিটার্নের তথ্য প্রকাশ করেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন এবং তার রানিংমেট কমলা হ্যারিস।
গত বছর বাইডেন তিন লাখ ৪৬ হাজার ডলার কর পরিশোধ করেছেন। অন্যদিকে, ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছরই আয়কর দেননি ট্রাম্প। তবে ট্রাম্পের দাবি তিনি কয়েক মিলিয়ন ডলার কর পরিশোধ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ইতোমধ্যেই ১০ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনের আর বেশি সময় হাতে নেই। ফলে উভয় প্রার্থীই নির্বাচনের প্রচারণায় ভোটারদের দলে টানতে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিতর্কে কোনো প্রার্থী অপরজনকে ছাড় দেননি। বরং একে অন্যকে তীব্রভাবে আক্রমণ করে গেছেন। তবে ক্রিস ওয়ালেস বলছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বাইডেন অভিযোগ তুলেছেন যে, তার প্রশাসন করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। তবে ট্রাম্প বলছেন, এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বলছেন, খুব শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে করোনার ভ্যাকসিন চলে আসবে।
এদিকে, ট্রাম্পের অভিযোগ বাইডেন করোনা মহামারির অযুহাতে দেশের অর্থনীতি এবং সব কার্যক্রম বন্ধ রাখতে চাইছেন। ট্রাম্প বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ জানে কিভাবে এই মহামারির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
তার মতে, লোকজন জানে তাদের কি করতে হবে। তারা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে সক্ষম এবং মাস্ক পরে চলাফেরা করতে পারে। তার মতে, সব অঙ্গরাজ্যের কার্যক্রম চালু রাখা প্রয়োজন।
এদিকে, ট্রাম্পের কথার জবাবে বাইডেন বলছেন, যতক্ষণ করোনা পরিস্থিতি ঠিক করা না যাবে ততক্ষণ অর্থনীতিও সচল হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্পকে সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাইডেন।
স্বাস্থ্য নীতিমালার বিষয়ে বাইডেন বলছেন, হেলথ কেয়ারের বিষয়ে ট্রাম্পের কোনো ভালো পরিকল্পনা নেই। তিনি দেশের ওষুধের মূল্য কমানোর কোনো পরিকল্পনাই নেননি। কিন্তু ট্রাম্প বলছেন, বাইডেন আসলে কি বলছেন তিনি নিজেই সেটা জানেন না।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের বিষয়ে ট্রাম্প বলছেন তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট। সুতরাং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকের আসনে যে কাউকে বসানোর ক্ষমতা তার আছে। কিন্তু এ বিষয়ে তার সঙ্গে একমত নন বলে জানিয়েছেন বাইডেন।
সান নিউজ/পিডিকে | Sun News