আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দিকে দিকে মৃত্যূর খবর। মিনিটে মিনিটে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি। শ্বাসরুদ্ধকর এক আতঙ্ক ঘরে-বাইরে। দুশ্চিন্তায় প্রতিটি পরিবার, উৎকণ্ঠায় প্রতিটি মানুষ। পুরো দেশই অবরুদ্ধ জানা-অজানা শঙ্কায়। পুরো দেশটাই যেন দুলছে অনিশ্চয়তার ভারী নিঃশ্বাসে।
অর্থ আর বিজ্ঞানে মহাবলীয়ান দেশটাও যেন অসহায় করোনা নামের ভাইরাসটির আগ্রাসী রূপের কাছে। চীনের সরকারি হিসেবেই আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১৬ জনে। আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪২ হাজার ৬৩৮ জন। বিচলিত তাই মহাশক্তিধর সরকার- রাষ্ট্রশক্তি।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ব্যর্থতার দায়ে তাই শত শত কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে অনেক জেষ্ঠ্য কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতিমধ্যে হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কমিশনের প্রধান ও ডেপুটি ডিরেক্টরকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া দেশটির স্থানীয় রেড ক্রসের ডেপুটি ডিরেক্টরকেও পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, আরো কয়েকশো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে এবং সেইসঙ্গে সতর্কও করা হয়েছে অনেককে।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, বেড়ে চলেছে মৃত্যূর সংখ্যাও।
এছাড়া চীনের বাইরে এই ভাইরাসে ফিলিপাইনে একজন এবং হংকংয়ে আরেক জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বের প্রায় ২৫ টি দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মত সমস্যা দেখা দেয়।
এদিকে হংকংয়ের জনস্বাস্থ্য মহামারী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল লিং দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে এটি মহামারী আকারে বিশ্বের ৬০ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন ।
করোনাভাইরাসকে আইসবার্গের সঙ্গে তুলনা করে গ্যাব্রিয়েল লিং বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এই আইসবার্গের আকার এবং আকৃতি নিরূপণ করা। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রত্যেক ব্যক্তি অন্য প্রায় আড়াই জনের শরীরে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটাতে পারেন। যে কারণে এই সংক্রমণের হার ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ হতে পারে।
এরইমধ্যে করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে চীনে বিশেষজ্ঞ তদন্ত দল পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সোমবার সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আধানোম বলেন, চীনে কখনও ভ্রমণ করেননি এমন মানুষের মধ্যেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপারটি উদ্বেগজনক। আর এটা ‘কেবল শুরু’ হতে পারে। সামনে আরও কঠিন সময় আসছে।
সান নিউজ/সালি