আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় রেকর্ড ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দারিয়েছে। এ সময় নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। এছাড়াও হাজার হাজার মানুষ তাদের নিজ নিজ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাই নিয়েছেন। এই রাজ্যটিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৭ লাখ। এর ফলে কিছু কিছু স্থানে বহু ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত
শুক্রবার (২২ আগস্ট) ভোরে ১ প্রতিবেদনে এ তথ্যটি জানিয়েছে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম।
এতে বলা হয়েছে, গত ৪ দিন ধরে ত্রিপুরায় ভারী বর্ষণের ফলে বন্যা পরিস্থিতি বৃহস্পতিবারও ভয়াবহ অবস্থায় ছিলো। এই দিন দক্ষিণ ত্রিপুরায় কাদার স্রোতে চাপা পড়ে নারী ও শিশুসহ ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ ত্রিপুরার ৮টি জেলার জন্যই ‘রেড অ্যালার্ট’ বজায় রেখেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ সময় বন্যা কবলিত এলাকায় সাহায্য ও সহায়তা আরও বাড়াতে বিমান বাহিনী কাজ করছেন।
এছাড়াও ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) আরও দল সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লোহিত সাগরে ফের হামলা
এদিখে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ২টি সি-১৩০ এবং ১টি এএন-৩২ বিমান এই ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য কাজ করেছে। এছাড়াও হেলিকপ্টারগুলোও দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে এবং আরও ত্রাণ তৎপরতা চালাতে কাজ চালিযে যাচ্ছে।
এ সময় ত্রিপুরা রাজ্যের নদীগুলোর পানির স্তর এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি রয়ে গেছে। এতে গোমতি, দক্ষিণ ত্রিপুরা, উনাকোটি এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাগুলো বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অপরদিকে ধলাই, খোয়াই, দক্ষিণ ত্রিপুরা, পশ্চিম ত্রিপুরা, উত্তর ত্রিপুরা এবং উনাকোটিসহ ৬টি জেলায় নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ৮ জেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সকল কিছু মিলিয়ে এই রাজ্যে ৬৫,৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য গত সোমবার (১৯ আগস্ট) থেকে জেলা প্রশাসন ৪৫০টি ত্রাণ শিবির খুলেছে। এ সময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৭ লাখ।
এই বন্যার কারণে ত্রিপুরা রাজ্যে ২০৩২টি স্থানে ভূমিধস হয়েছে, এর মধ্যে ১৭৮৯টি ইতিমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে। এদিকে পুরোদমে চলছে এর সংস্কার কাজ। ১৯৫২টি স্থানে রাস্তায় ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে ৫৭৯টি স্থানে এখন পর্যন্ত ভাঙন মেরামত করে পরিষেবা পুনঃরুদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে বিস্ফোরণে নিহত ১৭
এছাড়াও আগরতলা-সমস্ত রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং অন্যান্য বন্যা দুর্গত এলাকায় টেলিযোগাযোগ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।
এ সময় দেশটির আবহাওয়া দপ্তর এই রাজ্যের অনেক জায়গায় শুক্রবার এবং শনিবার ভারী-অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। সারা রাজ্যে শুক্রবার এবং শনিবার ৪টি জেলায় “রেড অ্যালার্ট” জারি করা হয়েছে।
সান নিউজ/এমএইচ