আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানে তীব্র গরমে গত ছয়দিনে ৫ শতাধিকের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একদিনেই উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় দেড়শো জনের মরদেহ।
আরও পড়ুন : কেনিয়ায় কর বিরোধী বিক্ষোভে নিহত ২২
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে মৃতের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। দেশটির ইধি (Edhi) অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বলছে, তারা সাধারণত প্রতিদিন করাচি শহরের মর্গে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জনের লাশ নিয়ে যায়। তবে গত ছয় দিনে তারা প্রায় ৫৬৮ টি লাশ সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র গত মঙ্গলবারই তারা সংগ্রহ করেছে ১৪১টি লাশ।
আরও পড়ুন : পাকিস্তানে ৯ জনকে গুলি করে হত্যা
অবশ্য প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ ঠিক কী তা অলাদা করে এখনই বলা যাবে না। তবে করাচির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এর ওপরে বেড়ে যাওয়ায় মৃতের সংখ্যাও বেড়েছে। আর উচ্চ আর্দ্রতার কারণে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো গরম অনুভব হচ্ছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
লোকজন সাহায্যের খোঁজে হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছে। করাচির সিভিল হাসপাতালে গত রোববার থেকে বুধবারের মধ্যে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ২৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের প্রধান ডা. ইমরান সারওয়ার শেখ। তাদের মধ্যে বারোজন মারা গেছেন।
আরও পড়ুন : গাজায় নিহত বেড়ে ৩৭,৬৫৮
ডা. ইমরান শেখ বিবিসিকে জানান, ‘আমরা যাদেরকে হাসপাতালে আসতে দেখেছি তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ৬০ বা ৭০ এর দশকে, যদিও তাদের মধ্যে প্রায় ৪৫ বছরের আশপাশের কয়েকজন এবং এমনকি ২০ বছরের বেশি বয়সী এক দম্পতিও রয়েছে।’
ডা. ইমরান সারওয়ার শেখ বলেন, ‘আমরা যাদের হাসপাতালে আসতে দেখেছি তাদের অনেকেই বাইরে কাজ করছিল। আমরা তাদের বলেছি- তারা যাতে প্রচুর পানি পান করে এবং এই উচ্চ তাপমাত্রায় হালকা পোশাক পরিধান করে।’
বিবিসি জানিয়েছে, তীব্র গরমের এই উচ্চ তাপমাত্রা এই সপ্তাহান্তে শুরু হয়। একজন আবহাওয়াবিদ এটিকে ‘আংশিক তাপপ্রবাহ’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পরে জনসাধারণকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টার অংশ হিসেবে বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ কেন্দ্র এবং ক্যাম্প স্থাপন করে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন : ভারতে নতুন স্পিকার ওম বিড়লা
এদিকে বিভিন্ন ছবিতে দেখা যাচ্ছে, গরমের মধ্যে শিশুরা ঝর্ণায় খেলা করছে। মূলত এর মাধ্যমে কিছুটা শীতল হওয়ার চেষ্টা করছে তারা। মোহাম্মদ ইমরান নামে এক ব্যক্তিও ঠাণ্ডা থাকার জন্য কার্যত লড়াই করে চলেছেন।
পাকিস্তানের সংবাদমধ্যম ডন জানায়, শহরের রাস্তায় জরুরি পরিষেবাগুলো প্রায় ৩০ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। পুলিশ সার্জন সুমাইয়া সৈয়দ এই পত্রিকাকে বলেন, অনেকেই সন্দেহভাজন মাদকাসক্ত। তবে তাদের শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই।
শহরের চিকিৎসকরা বলছেন, তারা এর আগে এমন কিছু দেখেননি। করাচির বাসিন্দা মোহাম্মদ জেশানের কাছে অবশ্য এটা পরিষ্কার যে সমস্যাটা আসলে ঠিক কী। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘এটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হয়েছে। এটি সারা বিশ্বে ঘটছে। এটা ইউরোপে ঘটছে। তারা তীব্র গরমের মুখোমুখি হলেও তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে।’
কিন্তু এখানে দুঃখজনক যে, সরকার কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
সান নিউজ/এমআর