আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে পাঠানো একটি চিঠিতে রাইসিন নামক এক মারাত্মক বিষাক্ত পদার্থের সন্ধান মিলেছে। তবে হোয়াইট হাউজে পৌঁছানোর আগেই সেই চিঠি জব্দ করা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউজের ঠিকানায় পাঠানো যেকোনো চিঠি সেখানে পৌঁছে দেওয়ার আগেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার একটি আলাদা কার্যালয় রয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানেই বিষয়টি ধরা পড়ে।
খামের ভেতরে চিঠিতে রাইসিন নামক ওই মারাত্মক বিষাক্ত পদার্থ মেশানো ছিল। ক্যাস্টর অয়েল তৈরি হয় যে বীজ থেকে, সেই একই বীজ থেকেই তৈরি এই রাইসিন বিষ। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি বলছে, রাইসিন এতটাই বিষাক্ত যে মাত্র কয়েক ফোটা লবণ দানার পরিমাণ একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটাতে পারে।
রাইসিন কোনোভাবে খেয়ে ফেললে, নিশ্বাসের সঙ্গে অথবা ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে মাথা ঘোরা, বমি শুরু হয়। এরপর শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হতে থাকে। কতটুকু পরিমাণ রাইসিন শরীরে প্রবেশ করেছে তার উপর নির্ভর করে ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটে।
রাইসিনের বিষক্রিয়া প্রতিরোধে কোনো প্রতিষেধক নেই। ল্যাব পরীক্ষাতেও রাইসিনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এবং প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিস এখন তদন্ত করে দেখছে যে, এই চিঠি কোথা থেকে পাঠানো হয়েছে। অন্য আরও কাউকে একই ধরনের চিঠি পাঠানো হয়েছে কি না, সেটিও তদন্ত করছে সংস্থা দুটি।
মার্কিন টেলিভিশন সিএনএনকে এফবিআই জানিয়েছে, আপাতত কোনো ধরনের ঝুঁকি তারা দেখছেন না। নিউইয়র্ক টাইমসকে আর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চিঠিটি কানাডা থেকে পাঠানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, কানাডিয়ান পুলিশ জানিয়েছে যে, বিষয়টির তদন্তে তারা এফবিআই এর সঙ্গে কাজ করছে। সিডিসি বলছে, রাইসিন দিয়ে তৈরি গুড়ো ও স্প্রে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রে এর আগেও হোয়াইট হাউজকে উদ্দেশ্য করে রাইসিন মেশানো চিঠি পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও অন্যান্য কয়েকজন কর্মকর্তাকে রাইসিনের গুড়ো মেশানো চিঠি পাঠানোর দায়ে ২০১৪ সালে মিসিসিপির এক ব্যক্তিকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এর চার বছর পর ২০১৮ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর ও হোয়াইট হাউজে একই ধরনের চিঠি পাঠানোর জন্য একজন সাবেক সেনা সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়।
সান নিউজ/ বিএম/ এআর